‘নোট’ আর ‘ভোট’– ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে এই দুটি শব্দ যেন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হয়ে পড়েছে। ভোট এলেই নোটের গন্ধ পান তদন্তকারীরা। একাধিকবার এই রাজ্যের রাজনৈতিক নেতাদের গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। একবার খোদ কলকাতা থেকেই ঝাড়খণ্ডের নেতাদের গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। চলতি বিধানসভা নির্বাচনেও তার অন্যথা হল না। এবারে গাড়ির টায়ারের ভিতরেই বান্ডিল বান্ডিল নোট উদ্ধার করলেন আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা। যা দেখে তাঁদের চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। আর সেই টাকা গুনতে মেশিন আনতে হয়েছে আধিকারিকদের।
বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির ময়দানে সরগরম রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, মানুষের ভোট কিনতে এই টাকা ভোটারদের ঘুষ হিসেবে দেওয়ার চেষ্টা করছিল রাজ্যের শাসকদল ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার নেতারা। সেজন্য ভিনরাজ্যে থেকে এই টাকা নিয়ে আসা হচ্ছিল।
জানা গিয়েছে, ভোটের কারণে রাজ্যজুড়ে আদর্শ আচরণবিধি লাগু রয়েছে ঝাড়খণ্ডে। কোথাও নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ঝাড়খণ্ডে সক্রিয় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা। জায়গায় জায়গায় গাড়ি থামিয়ে চলছে তল্লাশি। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ও আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা এরকমই একটি নাকা তল্লাশি চালাচ্ছিলেন গিরিডি জেলার দেওরি এলাকায়। সেখানে বিহারের সীমানা পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে প্রবেশের সময় একটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালাতে গিয়েই উদ্ধার হয় প্রচুর টাকা। গাড়িটির ডিকিতে রাখা একটি অতিরিক্ত চাকার টায়ার খুলতেই মেলে সাফল্য। টায়ারের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় বান্ডিল বান্ডিল টাকা। উদ্ধার হওয়া সেই নোটের পরিমাণ এতটাই ছিল যে, তা গুনতে মেশিন আনতে হয়। গোনার পরে বোঝা যায়, উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ৫০ লক্ষ। সেই টাকা উদ্ধারের ভিডিও ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গোডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চাকে আক্রমণ শানিয়েছেন। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, টায়ারের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে থরে থরে সাজানো নোটের বান্ডিল। যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘দৈনিক স্টেটসম্যান’।
তদন্তকারীরা এই টাকার উৎস সন্ধানে গাড়িতে থাকা চালক ও অন্যান্যদের জেরা শুরু করেছে। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, এই টাকা কোথা থেকে এলো এবং কোথায় ও কী উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, ভোটারদের মন জয় করতে টাকা বিলির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে এর পিছনে কোন রাজনৈতিক দল জড়িত আছে, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।