অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বসছে বায়োমেট্রিক, বাড়ছে কাঁটাতার, জানাল বিএসএফ

বিএসএফ নিরাপত্তা বাহিনী। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বর্তমানে প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিশেষভাবে উত্তপ্ত। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, নিপীড়নের নানা ঘটনা কানে আসছে। এই পরিস্থিতিতে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা। সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী বিএসএফ-এর দাবি, বিগত চার মাসে কেবল উত্তরবঙ্গেই অনুপ্রবেশ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। অনুপ্রবেশকারীদের আটকাতেই তাই কড়া হচ্ছে বিএসএফ। যে সমস্ত জায়গায় ইতিপূর্বে কাঁটাতার ছিল না, সেই সকল জায়গাকেও কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে – এমনটাই জানালেন শিলিগুড়ি সীমান্তের বিএসএফ আধিকারিকেরা। বিএসএফ-এর উত্তরবঙ্গ সীমান্তের আইজি সূর্যকান্ত শর্মার বক্তব্য, ‘তিন বিঘা করিডর নিয়ে যে জটিলতা ছিল, সেটাও কেটে গিয়েছে।’

সোমবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে এমনটা জানান বিএসএফের কর্তাব্যক্তিরা। আইজি সূর্যকান্ত শর্মা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের ডিআইজি জেনারেল কুলদীপ সিংহ, ডিআইজি অপারেশন সঞ্জয় শর্মা, ডিআইজি পিএসও সঞ্জয় পন্থ। আলোচনা চলাকালীন তাঁরা জানান, উত্তরবঙ্গের মোট ৮টি জেলা জুড়ে প্রায় ১৯৩৭ কিমি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থা আরও কড়া করা হচ্ছে। থার্মাল ক্যামেরা, নাইট ভিশন ক্যামেরা, সিসিটিভি ক্যামেরা, ড্রোনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নত নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। যে সকল জায়গা দিয়ে সীমান্ত পারাপার করা সম্ভব, সেই সকল জায়গাতেই বসানো হয়েছে বায়োমেট্রিক মেশিন।

বিএসএফ-এর আইজি জানান, ‘সীমান্তে টানা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে অগস্ট মাসের পর থেকে ও পার থেকে সংখ্যালঘুদের এ পারে আসার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)-র সঙ্গে আলোচনা করে ওই সমস্ত সমস্যা মেটানো হচ্ছে। আর ফেন্সিংয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণে রাজ্য সরকারেরও ভাল সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে। ফ্রন্টিয়ারের অধীনে থাকা মোট সীমান্তের ১০ শতাংশে ফেন্সিং নেই। খুব শীঘ্রই সেই জায়গাগুলোতে ফেন্সিং লাগানো হবে।’


প্রসঙ্গত, গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য ১২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএসএফের উত্তরবঙ্গ সীমান্তের হাতে। অনুপ্রবেশের কারণেই গ্রেপ্তার হন ১৭৩ জন ভারতীয় নাগরিকও। এই বছরে এখনও পর্যন্ত ১৯৪ জন বাংলাদেশি নাগরিক এবং ১৯৭ জন ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৩ জন রোহিঙ্গা এবং অন্য ৩ অনুপ্রবেশকারীকে ধরে মোট ৩৯৭ জন ধরা পড়েছেন সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর হাতে।