ভোপাল, ২০ জুলাই – মধ্যপ্রদেশে কর্তব্যরত অবস্থায় কোনও পুলিশকর্মীর মৃত্যু হলে সরকারের তরফে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকে তাঁর পরিবার। পুলিশকর্মী বিবাহিত হলে সেই অর্থ পেতেন তাঁর স্ত্রী। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব ঘোষণা করলেন, মৃত্যুর পরে ক্ষতিপূরণের অর্থ স্ত্রী এবং ওই পুলিশকর্মীর বাবা-মায়ের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ হবে। অর্থাৎ, স্ত্রী পাবেন ৫০ লক্ষ টাকা এবং বাবা-মা পাবেন ৫০ লক্ষ টাকা।
মধ্যপ্রদেশের পুলিশ বিভাগের জন্য নতুন নিয়মের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। কর্তব্যরত অবস্থায় কোনও পুলিশকর্মীর মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণের অর্থ তাঁর স্ত্রীর পাশাপাশি বাবা-মাও পাবেন। শহিদ ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংয়ের কীর্তি চক্র নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই এই বড় ঘোষণা মধ্যপ্রদেশ সরকারের। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব ঘোষণা করেছেন এই নিয়ম চালু হবে রাজ্য পুলিশের কর্মীদের জন্য।
কিছু দিন আগে ভারতীয় সেনায় কর্মরত ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংহের মরণোত্তর সম্মান ‘কীর্তি চক্র’ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ক্যাপ্টেনের বাবা-মা দাবি করেছিলেন, ‘কীর্তি চক্র’ নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছেন তাঁদের পুত্রবধূ। সেনার ‘নেক্সট অফ কিন’ নীতি বদলের দাবিও জানিয়েছিলেন তাঁরা। এর মাঝে মধ্যপ্রদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ভারতীয় সেনায় মেডিক্যাল সার্ভিসের অফিসার ছিলেন ক্যাপ্টেন অংশুমান। ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই সিয়াচেনে সেনাশিবিরের গোলাবারুদ রাখার ঘরে আগুন ধরে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল অংশুমানের। মৃত্যুর আগে চার থেকে পাঁচ জনের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন তিনি। গত ৫ জুলাই তাঁর মরণোত্তর সম্মান ‘কীর্তি চক্র’ তুলে দেওয়া হয় অংশুমানের মা এবং স্ত্রীয়ের হাতে। মাত্র পাঁচ মাস আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তার পরেই বদলি হয় সিয়াচেনে।
ক্যাপ্টেনের স্ত্রী এবং মায়ের হাতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্মান তুলে দিয়েছিলেন। সেই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন পরেই ক্যাপ্টেনের বাবা এবং মা দাবি করেন, তাঁদের পুত্রবধূ ‘কীর্তি চক্র’ নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। সরকারিভাবে নিজের ঠিকানাও বদলে দিয়েছেন। অংশুমানের পোশাক, যাবতীয় নথিও তাঁদের পুত্রবধূ সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁরা জানান, অংশুমানের ছবি ছাড়া তাঁদের কাছে আর কিছুই নেই। অংশুমানের মায়ের কথায়, “রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে আসার সময় সেনা আধিকারিকদের অনুরোধে একবার কীর্তি চক্রটা ছুঁয়ে ছবি তুলেছিলাম। তার পরেই ওই মেডেল নিয়ে বাপের বাড়িতে ফিরে গিয়েছে স্মৃতি ।” ছেলেকে হারানো বাবা-মায়ের আর্জি, যে মেডেলটি দেওয়া হয়েছিল তার একটি রেপ্লিকার ব্যবস্থা করা হোক যাতে বাবা-মাও ছেলের স্মৃতি আঁকড়ে বাঁচতে পারেন।
এই বিতর্কের পরই মধ্যপ্রদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত , মৃত্যুর পরের আর্থিক সহায়তার অর্থ স্ত্রী এবং ওই পুলিশকর্মীর বাবা-মায়ের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ হবে।