ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে হবে। এই ইস্যুতে ভারতের উপর চাপ বাড়াল বিএনপি। হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে দায়ের হচ্ছে একের পর এক মামলা। মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা-সহ অন্ততপক্ষে ২৭টি মামলা করা হয়েছে।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালেও হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করার অভিযোগ করা হয়েছে। তাই তাঁকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে সেখানে বিচারের দাবি করা হয়েছে। এই নিয়েই ভারতকে চাপ দিল বিএনপি। তাদের দাবি বাংলাদেশের মানুষ হাসিনার বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের সরকারের হাতে হাসিনাকে আইনি পদ্ধতিতে তুলে দেওয়ার জন্য ভারতকে ‘অনুরোধ’ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বিচারের জন্য বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে হবে। মঙ্গলবার সে দেশের আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপির তরফে দিল্লিকে এই ‘বার্তা’ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেন, ‘‘হাসিনার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ দেশের মানুষ তাঁর বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আপনাদের কাছে অনুরোধ অবিলম্বে তাঁকে হস্তান্তরিত করা হোক ।’’
এর পরেই নাম না করে সরাসরি ভারতকে নিশানা করে আলমগির বলেন, ‘‘এটি দুর্ভাগ্যজনক যে আমাদের প্রতিবেশী দেশ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। সেখানে বসে তিনি বাংলাদেশবাসীর বিজয় বানচাল করার ষড়যন্ত্র শুরু করছেন।’’ বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ক্ষমতার পালাবদলের পরে দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করছে প্রাক্তন শাসকদল বিএনপি। এই আবহে বিএনপি মহাসচিবের এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দাবি, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার রক্ষা করছে না। বিএনপির দাবি, গত ১৫ বছর ধরে হাসিনার একচ্ছত্র শাসন বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে দুর্বল করে দিয়েছে। বাংলাদেশে যে বিপ্লব হয়েছে তার বিরুদ্ধে এখন দিল্লিতে বসেও মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন হাসিনা, দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
প্রসঙ্গত, জনবিক্ষোভের জেরে গত ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন আওয়ামী লীগ প্রধান হাসিনা। তাঁর পর থেকে বোন রেহানার সঙ্গে দিল্লির ‘নিরাপদ ঠিকানায়’ রয়েছেন তিনি। সম্প্রতি মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। দেশের স্বরাষ্ট্র ও আইন—এই দুই মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, তাঁকে এখন দেশে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।’’ এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ভারতের উপর চাপ বাড়াল খালেদার দল।যদিও আওয়ামি লিগের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই হাসিনার বিরুদ্ধে একের পর এক সাজানো মামলা করা হচ্ছে।