২১ অক্টোবর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রবিবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি আবারও মহারাষ্ট্রের একটি প্রচার সভায় রাফায়েল চুক্তি নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেন।
মুম্বইয়ের চান্দিভালি বিধানসভা কেন্দ্রের এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল গান্ধি বলেন যে এই চুক্তিতে বিজেপি ‘কিছু ভুল’ করার জন্য ‘অপরাধবোধ’ করছে।
‘বিজেপি নেতাদের মনে কিছুটা অপরাধবোধ হয়েছে যে তারা রাফায়েল চুক্তিতে ভুল করেছে। এমনকি প্রতিরক্ষা আধিকারিকরা দাবি করেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাফালে যুদ্ধবিমান চুক্তিতে হস্তক্ষেপ করছেন। এই সত্য থেকে কেউ পালাতে পারবে না, নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ বা বিজেপি কেউই পারবে না’।
‘এই চুক্তিটি এখনও বিজেপি’কে আঘাত করে এবং তাই আমাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রথম যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করতে ফ্রান্সে গিয়েছিলেন। এর আগে কেউ এ জাতীয় যুদ্ধবিমান সংগ্রহের জন্য সরবরাহকারী দেশে যায়নি, সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে রাহুল গান্ধি জানিয়েছেন।
লোকসভা ভোটে দলের হতাশা জনক হারের পর কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করার পর থেকে রাজ্যে অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি সমাবেশের মধ্যে এটিই তাঁর প্রথম জনসাধারণের সামনে উপস্থিতি।
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে, রাহুল গান্ধি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে রাফায়েল চুক্তিতে ‘অনিয়ম’ আছে বলে অভিযোগ করেছিলেন।
রাফায়েল চুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে লক্ষ্য করে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় তিনি ‘চৌকিদার চোর’ স্লোগানটি ব্যবহার করেছিলেন, তবে সেই পরিকল্পনার উল্টো ফল হয় এবং কংগ্রেস বিরোধী দল গঠন করার মত যথেষ্ট আসন জিততে পারেনি।
রাফায়েল সম্পর্কে রাহুল গান্ধর এই মন্তব্য এমন সময় এসেছে যখন ৮’ই অক্টোবর কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং নিজেই প্রথম যুদ্ধবিমান আনার জন্য ফ্রান্সে গিয়েছিলেন।
২০১৬ সালে ভারত ফ্রান্সের সাথেচুক্তি করে যেখানে ভারত ফ্রান্সের থেকে ৩৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কিনবে যার মুল্য প্রায় ৫৮,০০০ কোটি টাকা (প্রায় ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), ভারতীয় বিমান বাহিনীর সরঞ্জাম আপগ্রেডের জন্য।
কংগ্রেস এই চুক্তিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে বারবার বলে আসছে যে, ইউপিএ সরকারের করা ৫২৬ কোটি টাকায় একটি বিমানের চুক্তি এখন বেড়ে ১৬৭০ কোটি টাকায় কেন হচ্ছে। ১২৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমানের চুক্তি হয়েছিল।
রাহুল গান্ধি তাঁর রবিবারের ভাষণে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভারতকে ‘বিভক্ত ও লুটপাটের’ অভিযোগ করেছিলেন, যেমনটি ব্রিটিশরা স্বাধীনতা-পূর্ব করেছিল।
শনিবার, রাহুল গান্ধি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ব্যর্থতার জন্য বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করেন।
‘ইউপিএ সরকারের আমলে ভারতীয় অর্থনীতি খুব শক্তিশালী ছিল, এমনকি মার্কিন অর্থনীতিকে টেক্কা দিতে সক্ষম ছিল। পুরো বিশ্ব আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করত। এখন, বর্তমান সরকারের অধীনে অর্থনীতির মর্যাদা কী,’ জিজ্ঞাসা করলেন গান্ধি।
২৮৮ সদস্যের মহারাষ্ট্র বিধানসভা ২১শে অক্টোবর ভোটগ্রহণ হবে এবং ২৪শে অক্টোবর ফলাফল ঘোষণা করা হবে।