আয় ও ব্যয়ে বিজেপি-তৃণমূল থেকেও দূরে কংগ্রেস

দিল্লি, ১০ ফেব্রুয়ারি– গত আর্থিক বছরে শুধু নির্বাচন খাতে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা খবচ করেছে বিজেপি৷ সেখানে ওই একই আর্থিক বছরে নির্বাচন খাতে কংগ্রেস ব্যয় করে ১৯২ কোটি টাকা৷ অর্থাৎ প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের তুলনায় বিজেপি খরচ করে প্রায় পাঁচগুণ বেশি অর্থ৷ এই হিসাবের মধ্যে বিজেপির প্রার্থীদের প্রচার খরচ ধরা নেই৷ তাঁরা আলাদা নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত অঙ্ক মেনে খরচ করেছেন৷ ওই এক বছরে উত্তর প্রদেশ, গোয়া, মণিপুর এবং পাঞ্জাবে বিধানসভার নির্বাচন হয়৷ দলের তরফে অডিট রিপোর্টে ওই আর্থিক বছরে নির্বাচন খাতে যে খরচ দেখানো হয়েছে তার প্রায় পুরোটাই ব্যয় হয়েছে ওই চার রাজ্যে৷

প্রার্থীদের ভোট শেষের তিনমাসের মধ্যে আয়-ব্যয়ের চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হয় কমিশনে৷ অন্যদিকে, দলগুলি পেশ করে বাৎসরিক অডিট রিপোর্ট৷ তবে শুধু খরচ নয় আয়ের ক্ষেত্রেও কংগ্রেসের তুলনায় বিজেপি অঙ্ক দেখলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে৷ ওই একই আর্থিক বছরে বিজেপির আয়ের পরিমাণ ছিল কংগ্রেসের সাত গুণ বেশি৷ বিতর্কিত ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে বিজেপির আয়ের পরিমাণ ছিল ১২৯৪ কোটি টাকা৷ যা আগের বছরের তুলনায় অর্ধেকের কাছাকাছি বেশি৷ কংগ্রেসের আয় ও ব্যয় দুই-ই বিজেপির তুলনায় যৎসামান্য বলা চলে৷

এই হিসেবে আবার গত অর্থ বছরে কংগ্রেসের অ্যাকাউন্টে বন্ড বাবদ জমা পডে় ১৭১ কোটি টাকা৷ অর্থাৎ যদি নির্বাচনী সাফল্যের দিক থেকে বিচার করা হয় তাহলে পদ্ম শিবিরের রোজগার ক্রমেই বাড়ছে৷ তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে দল পরিচলনা এবং ভোটের খরচে৷ আয় এবং ব্যয়ে বিজেপির পাশে কংগ্রেসের টেকা দায়৷ ভোটে খরচে গেরুয়া শিবির কেমন উপুরহস্ত তা স্পষ্ট সদ্য নির্বাচন কমিশনে পেশ করা দলের অডিট রিপোর্টে৷


২০২১-২২ আর্থিক বছরে পদ্ম শিবির ভোটের জন্য ব্যয় করেছিল ৬৪৫ কোটি টাকা৷ পরের বছর ওই খাতে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে তারা৷ পদ্ম শিবিরের দাবি, ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে তারা বিপুল রোজগার করলেও এখনও দলের আয়ের ৫৪ শতাংশ আসে দলের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের চাঁদা থেকে৷ প্রসঙ্গত, ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে বিপুল রোজগার দিন দিন কমতে থাকায় কংগ্রেস গণহারে চাঁদা তুলতে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের রাস্তা ধরেছে৷ দু-দফায় তারা কয়েক কোটি টাকা তুলেছে৷ তবে তা বিজেপির তুলনায় কিছুই নয়৷ এমনকী ২০২১-২২ আর্থিক বছরে হাত শিবিরের রোজগার তৃণমূল কংগ্রেসের থেকেও কম হয়েছিল৷

বিজেপি জানিয়েছে, গত আর্থিক বছরে ব্যয় হওয়া ১১০০ কোটির মধ্যে তারা ৪৮৬ কোটি খরচ করে বিজ্ঞপনে৷ একাধিক বিজ্ঞাপন সংস্থাকে দিয়ে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন তৈরি করে সব ধরনের মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে৷ ৭৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে নেতাদের হেলিপ্টারের বিল মেটাতে৷ প্রায় ৭৫ কোটি টাকা পার্টি দলের প্রার্থীদের এককালীন অনুদান হিসাবে দিয়েছে৷ সেখানে দলীয় দফতরের কর্মচারীদের বেতন দিতে খরচ হয় ৪৭ কোটি টাকা৷