মুসলিম ছাত্রদের জন্য শুক্রবারের বিশেষ ছুটি। মুসলিম পড়ুয়ারা যাতে জুম্মার নমাজে নির্বিঘ্নে অংশ নিতে পারে। আর যাত্রী বিতর্ক। উত্তর বিহারের পূর্ণিয়া, কিসানগঞ্জ, কাটিহার ও আরারিয়া—এই চার জেলায় মুসলিমরা জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি।
কিসানগঞ্জে প্রায় ৬৭ শতাংশ। মুসলিম পড়ুয়ারা যাতে জুম্মার নমাজে নির্বিঘ্নে অংশ নিতে পারে সে জন্য শুরু থেকেই ওই এলাকায় স্কুল-কলেজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। পরিবর্তে চালু থাকে রবিবার।
আর এখানে সমস্যা বিজেপির। সেখানে ‘এক দেশ এক নিয়ম’ স্লোগান মুখে নিয়ে দাবি তুলেছে ওই চার জেলাতেও শুক্রবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হবে।
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব এই দাবি নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বিজয়কুমার চৌধুরীকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে মন্ত্রী চার জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের কাছ থেকে এই বিষয়ে রিপোর্ট তলব করেছেন।
শিক্ষামন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জনতা দল ইউনাইটেডের প্রভাবশালী নেতা। তিনি প্রকাশ্যে বিজেপির দাবি খারিজ বা গ্রহণ কোনও মন্তব্যই করেননি।
কিন্তু তাঁর দল প্রকাশ্য বিরোধিতায় নেমেছে বিজেপির। নীতীশের দলের বক্তব্য, সব কিছু আইনের দৃষ্টি দিয়ে দেখা ঠিক নয়।
ঐতিহ্য, প্রচলিত ব্যবস্থা, ধারাবাহিকতা, এসবেরও মূল্য আছে। শুক্রবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে পড়াশুনোয় কোনও সমস্যা হচ্ছে না। রবিবার পুরো ক্লাস হয়।
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র গুরু প্রকাশ পাসোয়ানের বক্তব্য, ‘আইনের শাসনে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই সাংবিধানিক কাঠামো অনুসরণ করতে হবে। আমরা আশা করি রাজ্য সরকার আন্তরিকভাবে বিষয়টি দেখবে।’
অন্যদিকে, কড়া জবাব দিয়েছেন জেডিইউ সংসদীয় বোর্ডের সদস্য উপেন্দ্র কুশওয়াহা বিজেপির দাবিকে ‘নন-ইস্যু’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
হিন্দিতে একটি টুইট করে তিনি বলেছছেন, ‘উর্দু স্কুলে সাপ্তাহিক ছুটির বিধান কি একটি গুরুতর বিষয়? অকারণে বিতর্ক তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।
যারা উর্দু স্কুলে শুক্রবারের ছুটি নিয়ে আপত্তি করেন তাদের জানা উচিত যে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও প্রতিমাসে প্রতিপদ ও অষ্টমীতে ছুটি দেয়।’
এই ব্যাপারে বিহার এনডিএ-র শরিক হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (ধর্মনিরপেক্ষ) জেডিইউ’র পাশে দাঁড়িয়েছে। দলের মুখপাত্র ড্যানিশ রিজওয়ান বলেন, ‘কিছু লোক অকারণে কিছু স্কুলকে বিতর্কে টেনে আনছে।
যখন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কোনও লিখিত অভিযোগ করেনি, তখন চালু ব্যবস্থা পরিবর্তনের কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’
বিহারে প্রায় ৭৫ হাজার স্কুল আছে। তারমধ্যে ওই চার জেলায় মুসলিম বহুল এলাকায় স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৫০০।
শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, এরমধ্যে অনেক স্কুল স্বাধীনতার আগে চালু হয়েছে। তখন থেকেই শুক্রবার স্কুল বন্ধ থাকে। এটা স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর কোনও সরকারের চালু করা নিয়ম নয়।