স্বাধীনতা দিবস নিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সরসংঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পৌষ সংক্রান্তির দিন আরএসএস প্রধান বলেছিলেন, ২২ জানুয়ারিই হল প্রকৃত স্বাধীনতা দিবস। কারণ ২০২৪ সালের এই দিনই রামমন্দিরের উদ্বোধন হয়েছিল। মোহন ভাগবতের এই মন্তব্যকেই বৃহস্পতিবার ‘দেশদ্রোহী’ মন্তব্য বলে ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
মমতার দাবি, স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার ভূমিকা সবথেকে বেশি। দেশের স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস নিয়ে তিনি গর্ব অনুভব করেন। মোহন ভাগবতের মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, উনি জেনে বলেছেন, নাকি না জেনে বলেছেন। এটা একটা অ্যান্টিন্যাশনাল (দেশদ্রোহী) মন্তব্য। আমি এর তীব্র সমালোচনা করছি এবং এই মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার নবান্নে স্বাস্থ্য বিষয়ক সাংবাদিক বৈঠকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মোহন ভাগবতের এই মন্তব্যের প্রসঙ্গ উঠে আসে। প্রাথমিকভাবে মমতা এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে ইতস্তত বোধ করেন। যদিও পরে তাঁর যুক্তি, এটা দেশের স্বাধীনতা বিষয়ক প্রসঙ্গ। তাই এর উত্তর ‘নবান্ন’ থেকে দেওয়া যেতেই পারে।
এদিন মমতা প্রশ্ন করেন, এভাবে কি দেশের ইতিহাস বদলানো যায়? কোনও রাজনৈতিক দল কি স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস কখনও বিকৃত করতে পারে? মোহন ভাগবতের মন্তব্যকে ‘বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘এ সব খুবই ডেঞ্জারাস কথা। ভারতের নাম ভুলিয়ে দেবে দেখতে পাচ্ছি!’
মমতার আরও অভিযোগ, ইতিমধ্যেই ইতিহাসের অনেক অধ্যায় বিকৃত করা হয়েছে। সংবিধানের অনেক অধ্যায় পাল্টে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এরকম কোনও মন্তব্য করা হতে পারে, তা তিনি কখনও ধারণাই করতে পারেননি বলে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘আমাদের কাছে স্বাধীনতা দিবস মানে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট। এটা আমাদের গর্ব। স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস নিয়ে আমরা গর্ব অনুভব করি।’
এদিন মমতার কথায় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা উঠে আসে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস থেকে গান্ধিজি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে অন্য সব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম উল্লেখ করে স্বাধীনতার গুরুত্ব বোঝান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্য রয়েছে। ভারতের বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিরা এই কথাই বলে গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মমতা।