অযােধ্যার বিতর্কিত জমি মামলায় শনিবার যে চূড়ান্ত রায় ঘােষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট, তাতে অযােধ্যার বিতর্কিত জমি দেওয়া হয়েছে হিন্দু পক্ষকে রামমন্দির নির্মাণের জন্য। মুসলিম পক্ষকে অযােধ্যার কোনও উপযুক্ত স্থানে মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জমি দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সেই রায়ে। এই রায়কে গুরুত্বপূর্ণ একটি রায় হিসেবে দেখেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
বিবিসি তাদের রিপাের্টে বলেছে যে, তাদের সাংবাদিক সুপ্রিম কোর্টের বাইরে রায় ঘােষণার সময় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতে মুখরিত হতে শুনেছেন আদলত চত্বরের বাইরে। যদিও প্রশাসনিক নির্দেশে বলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের রায়কে নিয়ে এভাবে উৎসাহী প্রদর্শন করা যাবে না। বিবিসি’র সংবাদদাতা রায়ের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছেন, পাঁচ বিচারপতিবিশিষ্ট সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের ঐকমত্যের রায়ের ফলে আশা করা যায় ভারতে এবার পুনঃসংহতি স্থাপনে সহায়ক ভূমিকা নেবে এই রায়, যা এই মুহুর্তে দেশে প্রয়ােজন আছে।
সিএনএন তাদের রিপাের্টে বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমির প্রাচীন ইতিহাস তুলে ধরে বলেছে, এই মামলা ছিল খুবই জটিল। তা ছাড়া এতে জড়িয়েছিল প্রত্নতাত্ত্বিক বিবাদ। পাশাপাশি, এই জমি বিবাদ মামলায় রং লেগেছিল ধর্ম এবং রাজনীতির। ভারতের আর্কেওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া সেই বিতর্কিত জমিতে খনন কার্য চালিয়ে চেষ্টা করেছিল প্রমাণ করার যে বাবরি মসজিদের স্থানেই জন্ম হয়েছিল শ্রীরামের।
পাকিস্তানে খ্যাতনামা ডন পত্রিকা লিখেছে অযােধ্যার জমি বিবাদে প্রদত্ত এদিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন যদি জানায় সুন্নী ওয়াকফ বাের্ড, তাহলে ফের একবার দীর্ঘ আইনি লড়াই শুরু হবে।
এদিনের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির অধীনস্থ হিন্দু রাষ্ট্রবাদীরা নিজেদের বিশাল জয় বলে প্রচার করবে। নরেন্দ্র মােদি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন অযযাধ্যার বিতর্কিত জমিতে মন্দির গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে।
দ্য গার্ডিয়ান তুলে ধরেছে হিন্দু মহাসভা ও সুন্নী ওয়াকফ বাের্ডের প্রতিক্রিয়া। তারা জানিয়েছে, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি রামমন্দির নির্মাণের জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা শুরু করেছিল।
ওয়াশিংটন পোস্ট এদিনের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে নরেন্দ্র মােদির ‘বিশাল জয়’ বলে উল্লেখ করেছে। রিপাের্টে বলা হয়েছে হিন্দুদের ভগবান রামের মন্দির নির্মাণের বহুদিনের স্বপ্ন ছিল ভারতের শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির। তাদের রিপাের্টে আরও বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বাইরে ‘জয় শ্রীরাম’, ‘মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে’ ইত্যাদি স্লোগান শােনা গেছে পুরােদমে। এমনকি, সংবাদদাতা শঙ্খ ধ্বনিও শুনতে পেয়েছে শীর্ষ আদালতের বাইরে।