ভোপাল, ১৭ ডিসেম্বর – অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নিজেদের অর্থেই ময়নাতদন্ত করতে হল মধ্যপ্রদেশের এক দরিদ্র আদিবাসী পরিবারকে। অত্যন্ত দুঃস্থ এই পরিবারকে ময়নাতদন্তের জন্য টাকা ধার করতে হয়। সাধারণভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটনায় ময়নাতদন্তের দায়িত্ব নেয় পুলিশ। এছাড়া সরকারি হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য কোন টাকাকড়ি দিতে হয় না। কিন্তু বিজেপি শাসিত মধ্য প্রদেশে তার অন্যথা ঘটল। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে শোরগোল। ওঠে বিতর্কের ঝড়।
সম্প্রতি মধ্য প্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মোহন যাদব। শুরু থেকেই বিতর্কের সম্মুখীন হতে হল তাঁকে। এক দরিদ্র ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর চরম হেনস্থার শিকার হতে হল পরিবারকে। শেষ পর্যন্ত নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে করতে হল ময়নাতদন্ত।
মধ্য প্রদেশের বুরহানপুর জেলার নেপানগর থানার চেনপুরা গ্রামের আদিবাসী বাসিন্দা ফুলসিং নরসিং কয়েকদিন ধরেই নিখোঁজ ছিলেন। খোঁজ না মেলায় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার। পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নিখোঁজের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ ওই ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজের তিন দিন পরে চেনপুরা গ্রামের একটি কুয়ো থেকে নিখোঁজ ফুলসিংয়ের দেহ উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য ময়নাতদন্তের প্রয়োজন হয়। পরিবারের অভিযোগ, এই ব্যাপারে পুলিশ কোনও উদ্যোগ নেয়নি ।
পুলিশের পক্ষ থেকে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা না করায় পরিবার উদ্যোগী হয়। কিন্তু ময়নাতদন্তের জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন , তা ব্যয় করার মতো ক্ষমতা তাদের ছিল না। এছাড়া, গ্রাম থেকে বহু দূরে সরকারি হাসপাতালে দেহ নিয়ে যেতে গাড়ি ভাড়া বাবদ আরও টাকার দরকার ছিল। ওই পরিবারের সাহায্যে কেউ এগিয়ে না আসায় বাধ্য হয়ে টাকা ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয় ওই মৃত ব্যক্তির।
মৃত ব্যক্তির আত্মীয় জানিয়েছেন, মৃতদেহ নেপানগর থেকে বুরহানপুরে আনতে হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। এ জন্য ৭ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে তাদের। ঋণ নেওয়া টাকা কীভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে ওই পরিবার। তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রী পরিচালিত সরকার এক্ষেত্রে কতটা মানবিক হবে তা আগামী দিনই বলবে।