রাজস্থানের জয়পুরে সড়ক দুর্ঘটনার জেরে অগ্নিকাণ্ড, ঝলসে মৃত্যু ৯ জনের

কাকভোরে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা রাজস্থানের জয়পুরে। পেট্রোল পাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজি ট্যাঙ্কার ও ট্রাকের সংঘর্ষে জেরে বিস্ফোরণ ঘটে। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। প্রায় ৩০০ মিটার জুড়ে সেই বিস্ফোরণের প্রভাব পড়ে। একের পর এক গাড়িতে আগুন ধরে যায়। গাড়ির ভিতরেই ঝলসে মৃত্যু হয় অনেকের। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। জয়পুরের জেলাশাসক জীতেন্দ্র সোনি জানিয়েছেন, অন্তত ৪০টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা আহতদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য হাসপাতালে যান।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্নিকাণ্ড আর বিস্ফোরণের জেরে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। আহত প্রায় ৫০ জন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের জেরে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। তার ফলে যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। বেশ কয়েক ঘণ্টা ওই রাস্তা দিয়ে যানচলাচল কার্যত স্তব্ধ ছিল। দমকলের ২০-২২টি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। জয়পুরের এক পেট্রোল পাম্পের কাছে একটি সিএনজি ট্যাঙ্কার দাঁড়িয়েছিল। সেই ট্যাঙ্কারে একটি ট্রাক এসে ধাক্কা মারতেই আগুন ধরে যায়। আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে পেট্রোল পাম্পের আশেপাশের জায়গায়। কিছুক্ষণেই পুড়ে ছাই বহু গাড়ি। একের পর এক ট্যাঙ্কার, ট্রাকে বিস্ফোরণ হয়। কয়েকটি ট্যাঙ্কারের তেল ও রাসায়নিক থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত দমকল কর্মীরা আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়িগুলির কাছে পৌঁছতে পারেননি। তবে ওই এলাকায় আরও তিনটি পেট্রোল পাম্প ছিল। সেগুলি নিরাপদ রয়েছে।


রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আহতদের দেখতে হাসপাতালে পৌঁছন। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। আহতদের উন্নত চিকিৎসারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডলে ভজনলাল শর্মা লিখেছেন, জয়পুর-অজমের জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিস্ফোরণের জেরে একটি বাসেও আগুন লেগে যায়। বাসের দরজা বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বেরোতে পারছিলেন না। সকলে কান্নাকাটি শুরু করে দেন। বাসের জানলা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। বাসে থাকা ৬ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এক যাত্রীর কথায়, বাসের মূল দরজা বন্ধ ছিল। ফলে যাত্রীরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাধ্য হয়ে জানলার কাচ ভেঙে লাফ মারেন অনেকে। উদ্ধারকাজ শুরুর আগে বাসের সামনে অংশ আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছিল।

দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শুক্রবার রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মার সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে আহত প্রায় ১০-১২ জন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন, তাঁদের দেহের প্রায় ৬০ শতাংশ দেহ পুড়ে গিয়েছে।