জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তথ্য সুরক্ষিত রয়েছে বলে জানালেন অসম রাজ্য কো-অর্ডিনেটর। ওয়েবসাইট থেকে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি সম্পর্কিত রেকর্ড হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়ার পর তােলপাড় শুরু হয়। এনআরসি স্টেট কো-অর্ডিনেটর হিতেশ দেব শর্মা বলেন, ‘অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তথ্য হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায়। কিন্তু চিন্তিত হওয়ার কোনও দরকার নেই, সমস্ত তথ্য সুরক্ষিত রয়েছে।’
তিনি বলেন, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে ১৫ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির তথ্য ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে না। চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষজন ও তালিকাভূক্তদের সম্পর্কে তথ্য ওয়েবসাইটে রয়েছে। ৩১ আগস্ট, ২০১৯ অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফেও ব্যাখ্যা দিয়ে জানানাে হয়েছে, জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তথ্য সুরক্ষিত রয়েছে। খুব শীঘ্রই সমাধান করা হবে।
৩,৩০,২৭,৬৬১ জন আবেদনকারীর মধ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চুড়ান্ত তালিকা থেকে ১৯,০৬,৬৫৭ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কোনও ব্যক্তি যদি তার স্ট্যাটাস জানতে চান, তাহলে সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিকে তার অ্যাপ্লিকেশন রিসিপ্ট নম্বর (এআরএন) অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বসাতে হবে। তাহলে ওই ব্যক্তি জাতীয় নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন কিনা বা তালিকাভুক্ত হয়েছেন কিনা জানতে পারবেন।
কিন্তু আগের বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে ওয়েবসাইটটি খােলার পর কোনও তথ্য দেখাচ্ছে না। বিরােধী দল কংগ্রেসের নেতা দেবব্রত সইকিয়া চিঠি লিখে এনআরসি স্টেট কো-অর্ডিনেটরকে রহস্যজনকভাবে ওয়েবসাইট থেকে তথ্য উধাওয়ের বিষয়টি দেখতে বলেন।
১১ নভেম্বর, প্রাক্তন স্টেট কো-অর্ডিনেটর জেলা পদ ছেড়ে দেন। হিতেশ দেব শর্মাকে স্টেট কো-অর্ডিনেটর পদে ৯ নভেম্বর নিয়ােগ করা হয়েছিল। তিনি ২৪ ডিসেম্বর কাজে যােগ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘চুক্তি নবীকরণের জন্য আমরা উইপ্রাে কর্তৃপক্ষের দরবারে আবেদন করেছি। আশার কথা, চুক্তি নবীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে, তবে কতটা সময় লাগবে সেটা বলা সম্ভব নয়। পুরাে ব্যাপারটাই উইপ্রাের হাতে রয়েছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘যেহেতু পুরাে ব্যাপারটা প্রযুক্তিগত ত্রুটি, সেহেতু আশা করা হচ্ছে, দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
আইএফএফের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও আইনজীবী অপর গুপ্তা বলেন, ‘রাজ্যের হাতে যে কোনও ধরনের নাগরিক তথ্য আদৌও সুরক্ষিত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। নাগরিক তথ্য যে সুরক্ষিত রয়েছে ও তা সযন্তে নিরাপদভাবে রেখে দেওয়া হয়েছে- তা রাজ্য সরকার বলতে পারছে না। শুধু তাই নয়, প্রাইভেট সেক্টর কনট্রাক্টরের ভূমিকাকেও আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রাইভেট সেক্টর কনট্রাক্টরই পরিষেবা দিচ্ছে।
উইপ্রাে লিমিটেডের তরফে জানানাে হয়েছে, টেন্ডার প্রক্রিয়ার জটিল ধাপ পেরােনাের পর অসমের ‘সিস্টেম ইন্টিগ্রেটর ফর এনআরসি’ হিসেবে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল। চুক্তি মােতাবেক, এনআরসি প্রকল্পে কোম্পানির টেকনিক্যাল সাপাের্ট দেওয়ার কথা। অসম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোম্পানির চুক্তি ২০১৯ সালের অক্টোবরে শেষ হয়ে গেছিল। সৌজন্য দেখিয়ে কোম্পানি জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত পরিষেবা দিয়েছে। অসম কর্তৃপক্ষ যদি চুক্তি নবীকরণ করতে চায়, তাহলে কোম্পানি পরিষেবা দিতে আগ্রহী।