নাবালিকা গণধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল অসম, অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে সরব এলাকাবাসী

প্রতিবাদে শামিল ধিঙ এলাকার বাসিন্দারা (Photo IANS)

অবশেষে প্রত্যাহার করা হল অসমে গণধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদে ডাকা অনির্দিষ্ট কালের বনধ। নগাঁও জেলা বাসিন্দাদের অসুবিধার কথা ভেবে বনধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে ১৪ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত দুই অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি অব্যাহত রেখেছেন তারা।

অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু) এবং অন্যান্য সংগঠন গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সমস্ত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বনধের ডাক দিয়েছিল।

ধিংয়ে আসু-র এক সদস্য রবিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের অসুবিধার কথা ভেবে আমরা সাময়িকভাবে বাজারের বনধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া, সোমবার আমাদের শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উৎসব রয়েছে। বিশেষ পুজোর জন্য অনেকেরই বিভিন্ন উপাচার কিনবেন। আপাতত পরিস্থিতির কথা ভেবে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা বনধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।


গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত আরও দুই অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন আসু নেতা। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু হয়েছে।

এদিকে শনিবার সকালে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে অসম গণধর্ষণের মূল অভিযুক্ত। ঘটনার পুননির্মাণের জন্য ধৃতকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেই সময় পুলিশের থেকে হাতকড়া ছাড়িয়ে ধৃত লাগোয়া পুকুরে ঝাঁপ দেয়। ঘণ্টা দুই তল্লাশির পর তার মৃতদের উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

প্রশ্ন উঠছে, আদৌ পুলিশের হাত ছেড়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছে অভিযুক্ত নাকি প্রভাবশালী কাউকে আড়াল করতে পুলিশই তাকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে? বিজেপি শাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দাবি করেছিলেন, পুলিশ অপরাধীদের খুঁজে বের করে চরম শাস্তির ব্যবস্থা করবে। কিন্তু আদতে দেখা গেল পুলিশ অপরাধীর নাগাল পেলেও পুলিশি গাফিলতির কারণে তার মৃত্যু হল।

প্রসঙ্গত, অসমের নগাঁও জেলায় টিউশন পড়ে বাড়ি ফেরার সময় গণধর্ষণের শিকার হয় দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ ধিং এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তিন যুবক ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ধর্ষণ করার পর তাকে বোরভেটি এলাকায় রাস্তার ধারে নগ্ন অবস্থায় ফেলে যায় অভিযুক্তরা।

প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই অবস্থায় উদ্ধার করেন। তাঁরাই পুলিশে খবর দিলে মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢিঙ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীর শরীরে অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর নগাঁও সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।