উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কৃষক হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্রর নাম। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের আদালত তাকে সমন পাঠালেও নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে পৌঁছয়নি আশিস। তার খোঁজে তল্লাশি চালাতে গিয়ে পুলিশের অনুমান নেপালে গা ঢাকা দিয়েছে আশিস। তার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে ওই ধারণা দৃঢ় হচ্ছে তদন্তকারীদের।
অন্যদিকে, এদিন লখিমপুর খেরিতে গিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। তিনি নিহত কৃষকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। নৃশংস এই ঘটনায় নাম জড়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিস মিশ্রের। তাঁর গাড়িতেই ওই কৃষকদের মৃত্যু হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে।
আর তারপর আশিসকে গ্রেপ্তারির পর দ্রুত শাস্তি দেওয়ার দাবি ওঠে সর্বস্তরে। চাপে পড়ে যোগী সরকার বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে। তদস্ত কমিটি গড়ে শুরু হয় তদন্ত। ৯ সদস্যের একটি টিম গড়া হয় পুলিশের তরফে। আদালতের তরফে সমন পাঠানো হয় আশিসকে। তবে সমন পেয়েও শুক্রবার হাজির হয়নি আশিস।
তারপর তার বাড়িতে গিয়ে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়ে নোটিস ঝোলানো হয়। আশিসের খোঁজে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, আশিসের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন নেপালের কাছাকাছি কোনও এক জায়গায়। তাতেই তাঁদের ধারণা হয়, নেপালে গা ঢাকা দিয়েছে আশিস। যদিও তার পরিবারের দাবি, অন্য কোথাও নয়, আশিস লখিমপুর এলাকাতেই রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের বিক্ষোভ চলাকালীন গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় চার কৃষকের। মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। চলে গণপিটুনিও। সেই হিংসাত্মক পরিস্থিতির মাঝে পড়ে প্রাণ হারান আরও ৪ জন।
ওইদিন রাতেই লখিমপুর খেরির উদ্দেশে রওনা দেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কিন্তু পুলিশ তাঁকে আটকে দেয়। ৩০ ঘণ্টা আটক রাখার পর প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটকানো হয় অখিলেশ যাদবকেও। তা নিয়ে আরও উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার প্রতিবাদে গর্জে উঠে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলকে পাঠান সেখানে।