হালে প্রথমে দলের ছাত্র, পরে যুব শাখা দাবি তোলে দলীয় সভাপতি পদে ফিরে আসুন রাহুল গান্ধি। তার হাতেই ফের নেতৃত্বের ব্যাটন তুলে দিন সোনিয়া গান্ধি। শনিবার খোদ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই রাহুলের নাম প্রস্তাব করলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী, প্রবীণ নেতা অশোক গেহলত।
তিনি এই প্রস্তাব দেওয়া অব্যবহিত আগেই ঠিক হয় পূর্ণ সময়ের সভাপতি বেছে নিতে নির্বাচন হবে আগামী সেপ্টেম্বরে। উৎসবের পর্ব শেষ হতেই পাঞ্জাব, গোয়া, উত্তরপ্রদেশ সহ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটের বাজনা পুরোমাত্রায় বেজে উঠবে। তাই প্রায় ১১ মাস পূর্ণ সময়ের সভাপতি নির্বাচনের কাজটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর পরেই অশোক গেহলতের প্রস্তাব গিরে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি দলের অন্তর্বর্তী সাংগঠনিক নির্বাচনের আগেই রাহুল গান্ধির হাতে অন্তর্বর্তী সভাপতির ব্যাটন তুলে দেওয়া হতে পারে? সূত্রের খবর বৈঠকে উপস্থিত কেউই গেহলতের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেননি। বরং গাড় নেড়ে সম্মতি জানিয়েছেন। গেহলত বর্তমানে গান্ধি পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতাদের মধ্যে বলতে গেলে এক নম্বরে অবস্থান করছেন।
যে কারণে রাজস্থানে শচীন পাইলটের বিরোধিতা সত্ত্বেও সোনিয়া-রাহুল-প্রিয়াঙ্কারা গেহলটকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরাননি। গান্ধি পরিবারের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের অনেকেই মনে করেন, সোনিয়া গান্ধি রাহুলের পরিবর্তে অনুগত কোনও অ-গান্ধি নেতাকেও সভাপতি হিসাবে তুলে ধরতে পারেন। তার ছক হল এটা প্রমাণ করা যে গান্ধি পরিবারের বাইরে কারও হাতে কংগ্রেস নিরাপদ নয়। তার অঙ্ক প্রমাণ করা কঠিনও নয়।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা মোটের ওপর কম। তিনি তখন দেখাতে পারবেন গান্ধি পরিবার কেন কংগ্রেসের পক্ষে অপরিহার্য। তাৎপর্যপূর্ণভাবে গান্ধি পরিবারের বাইরে যে সব নেতার নাম সভাপতি হিসাবে বিবেচনায় আছে তাদের অন্যতম স্বয়ং গেহলটই। তাকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি করে শচীন পাইলটকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে।
দলীয় সভাপতি হয়ে গেলে গেহলট নিজের রাজ্যেও দলকে নিজের শাসনে রাখতে পারবেন। অনুগত কাউকে রাজ্য সভাপতি করে। দ্বিতীয় নামটি হল কর্নাটকের প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। আগের লোকসভায় তিনি কংগ্রেসের নেতা ছিলেন। এখন রাজ্যসভার দলনেতা। নাম আছে সলমন খুরশিদেরও।
যিনি দলে জি ২৩ নামে বিদ্রোহী দলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে সরব। আছেন জয়রাম রমেশের মতো নেতাও। তবে সলমনকে সভাপতি করে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দেওয়া সম্ভব। একই অঙ্কে দলিত কোনও নেতাকেও সভাপতি করতে পারেন সোনিয়া গান্ধি।