উপত্যকায় বাতিল ৩৫-এ, কী আছে এই ধারায়

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। (File Photo: Twitter | @loksabhatv)

প্রত্যাশামতােই জম্মু ও কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। সােমবার রাজ্যসভায় এই সংক্রান্ত নতুন বিলের প্রস্তাব করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিল অনুযায়ী, উপত্যকায় লাগু হবে না সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫-এ ধার।

কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে উত্তাল সংসদ। এই জল্পনার মধ্যেই জেনে নেওয়া উচিত জম্মু ও কাশ্মীরে চালু সংবিধানের ৩৫-এ ধারা কী?

১. ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সংবিধানে এই ধারা অন্তর্ভুক্ত হয়।


২. এই ধারায় জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছে।

৩. এই ধারা অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা স্থির করতে পারে রাজ্যের ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ কারা এবং তাঁদের বিশেষ অধিকার কী হবে?

৪. কেবল স্থায়ী বাসিন্দারাই ওই রাজ্যে সম্পত্তির মালিকানা, সারকারি চাকরি বা স্থানীয় নির্বাচনে ভােট দেওয়ার অধিকার পান।

৫. রাজ্যের বাসিন্দা কোনও মহিলা রাজ্যের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। তাঁর উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তির উপরে অধিকার থাকে না।

জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৫-এ ধারার গুরুত্ব কোথায়?

১৯২৭ ও ১৯৩২-এ করদ রাজ্য (প্রিন্সলি স্টেট) জম্মু ও কাশ্মীরে স্থায়ী বাসিন্দা আইন চালু হয়েছিল। চালু করেছিলেন তৎকালীন শাসক মহারাজা হরি সিং।

১৯৪৭-এর অক্টোবরে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে মেনে নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন হরি সিং। ডােগার রাজাদের শাসনকালের মেয়াদ শেষে কাশ্মীরের আধিপত্য দখল করেন শেখ আবদুল্লা।

১৯৪৯-এ নয়াদিল্লির সঙ্গে আব্দুল্লার আলােচনার মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীর বিশেষ মর্যাদা (সংবিধানের ৩৭০) দেওয়া হয়। বিশেষ মর্যাদার জেরে প্রতিরক্ষা, বিদেশ এবং যােগাযােগ- এই তিন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আইন প্রযােজ্য ছিল না উপত্যকায়।

তবে ১৯৫২-তে প্রধানমন্ত্রী নেহরু ও আবদুল্লার মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের বহু আইনই সেখানে প্রযােজ্য হয়। এবং ৩৫-এ ধারাও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়।

২০০২ সালে জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে বাতিল হয় ৩৫-এ ধারায় মহিলাদের সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করার আইন। ওই ধারা অনুযায়ী, রাজ্যের বাসিন্দা কোনও মহিলা রাজ্যের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে সম্পত্তির অঙ্কিার থেকে বঞ্চিত হন। তাঁর উত্তরাধিকারীদেরও সম্পত্তির উপরে অধিকার থাকে না।

তবে হাইকোর্টের নির্দেশে বিয়ের পরও অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না মহিলারা। তবে তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তির উপর অধিকার থাকবে না। ৩৫-এ ধারার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন এক স্বেচ্ছাব্বেী সংগঠন সহ বেশ কয়েকজন আবেদনকারী।