অযৌক্তিক ও স্বেচ্ছাচারী-মহিলা নিয়ােগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তােপের মুখে সেনাবাহিনী

প্রতীকী ছবি (Photo: IANS)

সেনাবাহিনীর স্থায়ী কমিশনে নিজেদের জায়গা করে নিতে মহিলদের যে মেডিকেল ফিটনেস পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তা অযৌক্তিক এবং স্বেচ্ছাচারী। এমনই ব্যাখ্যা দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

দেশের ৮০ জন মহিলা অফিসার স্থায়ী কমিশনে স্থান পাওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানাে হয় ফিটনেসের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী যে সকল মহিলা কর্মীকে স্থায়ী কমিশন থেকে বাদ দিয়েছে তাদের অবিলম্বে স্থায়ী কমিশনে স্থান দিতে হবে।

সেনাবাহিনী নিয়ােগ পদ্ধতি সম্পর্কে শীর্ষ আদলতের তরফে বলা হয়, আমাদের বুঝতে হবে সমাজের কাঠামাে পুরুষদের জন্যই তৈরি করা হয়েছিল। তা পুরুষরাই তৈরি করেছিলেন। সেনাবাহিনীতে কাজ এমনিতেই কঠিন। তার ওপর যদি সমাজও চাপ সৃষ্টি করে, তবে কাজ করা আরও কঠিন হয়ে যায়। 


সুপ্রিম কোর্ট জানায়, সেনাবহিনীতে অ্যানুয়াল কনফিডেনশিয়াল রিপাের্ট ও মেডিকেল ফিটনেসের মানদণ্ড মহিলা অফিসারদের প্রতি বৈষম্যমূলক। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও এম আর শাহের বেঞ্চের তরফে বলা হয় এই ধরনের মানদণ্ড শর্ট সার্ভিস কমিশনের অফিসারদের পক্ষে ক্ষতিকারক।

বিচারপতি চন্দ্রচূড় স্থায়ী কমিশনের মহিলা অফিসারদের স্থান দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, বহু মহিলা অফিসারই কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। বিভিন্ন খেলাধুলাের অনুষ্ঠানেও তাদের সাফল্যকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশে মনে হচ্ছে স্থায়ী কমিশন বাের্ডে যারা রয়েছেন তারা নির্বাচনের পরিবর্তে আবেদন বাতিল করার জন্যই বসেছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল সেনাবাহিনীতে মহিলা অফিসারদেরও পুরুষদের মতােই কম্যান্ডিং পদে নিয়ােগ করা যেতে পারে। স্থায়ী কমিশনেও তাদের স্থান দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে মহিলাদের কম্যান্ডিং পদে নিয়ােগ না করা ও স্থায়ী কমিশনের স্থান না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমালােচনা করে কোর্টের তরফে বলা হয় এই ধরনের সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক ও বিরক্তিকর।

কেন্দ্রের তরফে এই সিদ্ধান্তের বিরােধিতা করে বলা হয়েছিল, বহু পুরুষ অফিসারই মহিলা অফিসারদের কম্যান্ড মানতে পছন্দ নাও করতে পারেন। এছাড়াও মহিলাদের ওপর সন্তানধারণ ও পরিবার সামলানাের দায়িত্ব থাকে। মাতৃত্বকালীন ছুটিও দিতে হয় তাঁদের। যা সেনাবাহিনীতে দেওয়া সম্ভব নয়।

সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের এই দাবিগুলি উড়িয়ে দিয়ে বলে, যাঁরা শর্ট সার্ভিস কমিশনের কাজ করছেন বা সেনাবাহিনীতে ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে আছেন, তাঁদের স্থায়ী কমিশনে জায়গা দিতে হবে।