ফের নৃশ্ংস হত্যাকাণ্ড হায়দরাবাদে। হায়দরাবাদের এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী গুরু মূর্তির ভয়াবহ কুকীর্তি সামনে এল। স্ত্রীকে খুন করার পর দেহ টুকরো করে কেটে প্রেসার কুকারে সেদ্ধ করেন ওই প্রাক্তন সেনাকর্মী। তারপর সেদ্ধ করা দেহাংশ ফেলে আসেন লেকে। গুরু মূর্তির নিজের মুখে এ কথা শুনে তাজ্জব হয়ে যায় পুলিশও। তাঁর দাবির সত্যতা যাচাই করতে তদন্ত শুরু করেছেন পুলিশকর্মীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রাক্তন সেনাকর্মী। বেশ কয়েকদিন আগে মেয়ের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রথমেই তাঁর স্বামী গুরু মূর্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। কিন্তু প্রথম থেকেই তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, গুরু মূর্তি এবং তাঁর স্ত্রী মাধবীর বিয়ে হয় ১৩ বছর আগে। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। গত কয়েকমাস ধরে তাঁদের সম্পর্কের তিক্ততা বাড়তে থাকে। মাঝেমধ্যেই তাঁদের মধ্যে বচসা হত। তার জেরে অতিষ্ঠ হয়ে পড়তেন প্রতিবেশীরাও। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে বছর ৩৫–এর মাধবীর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ১৮ জানুয়ারি স্থানীয় থানায় পরিবারের তরফে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। বলা হয়, দাম্পত্য কলহের জেরে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন মহিলা।
পুলিশ তদন্ত শুরু করে। শেষ কবে ওই সেনার স্ত্রীকে কোথায় দেখা গিয়েছিল, তাঁর কোথায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা নিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। তখনই নিখোঁজ মহিলার স্বামী গুরু মূর্তি পুলিশকে জানান, তিনি নিজেই স্ত্রীকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করে ফেলেছেন। বছর পঁয়তাল্লিশের মূর্তির দাবি আদৌ সত্য কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ আধিকারিক নাগারাজু জানান, গুরু মূর্তি একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী। বর্তমানে তিনি একটি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি দাবি করেন, গত ১৫ জানুয়ারি তিনি স্ত্রীকে খুন করেন। তার পরে সেই অপরাধকে চাপা দিতে স্ত্রীর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন। শরীরের মাংস এবং হাড় আলাদা করেন। মাংসের টুকরোগুলিকে প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করে ফেলেন। হাড়গুলিকে গুঁড়ো গুঁড়ো করেন হামানদিস্তা দিয়ে। তিন দিন ধরে এই কাজ চলে। শেষে সেদ্ধ হওয়া মাংস এবং হাড়ের গুঁড়ো মীরপেট লেকে ফেলে দেন ।
অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীর দাবি মতো মাধবীর দেহাংশ খুঁজছে পুলিশ। তল্লাশিতে নামানো হয়েছে পুলিশি কুকুরও। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত খোঁজাখুঁজির পরও মীরপেট লেক থেকে কোনও দেহাংশ খুঁজে পাননি তদন্তকারির।
কিন্তু কেন স্ত্রীকে এইভাবে খুন করলেন গুরু ? জানা গিয়েছে, দুজনের মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল তুঙ্গে। প্রায়ই স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতেন তিনি। তবে এটিই খুনের একমাত্র কারণ বা আসল সত্য কি না তা জানতে তদন্ত চলছে।