দিল্লি, ১৬ জুলাই – জঙ্গিদের আক্রমণে কাশ্মীরে ধারাবাহিকভাবে শহিদ হচ্ছেন সেনা জওয়ানরা। গত ৩২ মাসে কাশ্মীরে শহিদ হয়েছেন ৪৮ জন জওয়ান। সোমবারই জঙ্গি দমন অভিযানে বেরিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ সেনাকর্মী। এই পরিস্থিতিতে শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন রাহুল গান্ধি । লোকসভার বিরোধী দলনেতার কথায়, বিজেপি সরকারের ভ্রান্ত নীতির জন্যই বারবার সেনার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে উপত্যকায় ।
সোমবার জঙ্গি হানায় ফের শহিদ হন ৫ সেনা জওয়ান। শোকস্তব্ধ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান রাহুল গান্ধি । একের পর এক জঙ্গি নিকেশ অভিযান জওয়ানদের শহিদ হওয়ার ঘটনা সত্যি উদ্বেগের বলে জানান তিনি । তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে একটানা সন্ত্রাসবাদী হামলা প্রমাণ করে সেখানকার পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের।’ রাহুল গান্ধি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন বারবার এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটছে ? এক্স হ্যান্ডেলে রায়বেরেলির সাংসদ বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় প্রয়াত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাই। একের পর এক হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। বিজেপির ভুল সিদ্ধান্তের ফল ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের সেনা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের। প্রত্যেক দেশপ্রেমিক ভারতীয়র দাবি, লাগাতার এই জঙ্গি হামলার দায় নিতে হবে সরকারকে। যারা আমাদের দেশের এবং সেনার ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে।এই শোকের মুহুর্তে গোটা দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ উল্লেখ্য, লাগাতার জঙ্গি হামলায় সেনা জওয়ানদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চললেও সরকারের তরফে প্রকাশ্যে কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি।
সেনা আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সোমবার রাত পৌনে আটটা নাগাদ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের আধিকারিকরা যৌথভাবে টহলদারি দিচ্ছিলেন। ডোডা টাউন থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে এক জঙ্গল এলাকা ধরি গোটে উরারবাগি এলাকায় জঙ্গি তল্লাশি অভিযান চলছিল। এক সেনা অফিসার সহ চার সেনা জওয়ান ও জঙ্গিদের মধ্যে গুলি বিনিময় চলে ২০ মিনিট ধরে। অভিযান চলাকালীন পিছু হঠবার জায়গা না পেয়ে নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। পালটা জবাব দেয় সেনাও। জঙ্গিদের ছোড়া গুলিতে আহত হন এক সেনা অফিসার-সহ ৫ জওয়ান। সোমবার রাতেই ৫ জনের মধ্যে ৪ জন জওয়ান শহিদ হন। মঙ্গলবার আরও এক জওয়ান শহিদ হয়েছেন বলে সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে।
ডোডায় এই মারণ হামলার দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মহম্মদের ছায়াসঙ্গী কাশ্মীর টাইগার্স। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর ২০২১ সালে প্রথম শিরোনামে উঠে আসে এই সংগঠন। গত সপ্তাহে কাঠুয়াতে সেনা কনভয়ে হামলা ও ৫ জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনাতেও এই জঙ্গি সংগঠন দায় স্বীকার করে।