• facebook
  • twitter
Friday, 4 October, 2024

উপযুক্ত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি প্রধানমন্ত্রীর

লাদাখ সংঘর্ষের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন চিনের প্রতি এক বার্তায় জানিয়েছেন, ভারত যেকোনও প্ররোচনার উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (File Photo: IANS)

লাদাখ সংঘর্ষের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন চিনের প্রতি এক বার্তায় জানিয়েছেন, ভারত যেকোনও প্ররোচনার উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত। কিন্তু শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে ভারত ধৈর্যের সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরূপ আচরুণ সহ্য করে থাকে। লাদাখে ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষে কুড়ি জওয়ান নিহত হওয়ার ঘটনা পর্যালোচনার জন্য শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্স করবেন দেশের সকল বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে।

লাদাখের গালওয়াল উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে কুড়ি ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার খবর সংবাদ সংস্থাগুলি সেনা সূত্র উদ্ধৃত করে প্রচার করেছে। অন্যদিকে চিনের কতজন সেনা নিহত বা আহত হয়েছে তার সঠিক কোনও সংবাদই পাওয়া যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় জওয়ানরা দেশ রক্ষায় চিনা সেনা প্রতিরোধে প্রাণ দিয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগ বিফল হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার আগে এদিন নিহত কুড়ি জওয়ানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে কোনও মতপার্থক্যকে সমস্যায় পরিণত করতে চায় না ভারত। কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্ব ও সংহতি রক্ষায় কোনও আপস করা হবে না। মনে রাখতে হবে ভারত কোনও দেশকেই প্ররোচনা দেয় না। প্রয়োজন হলেই ভারত তার সার্বভৌমত্ব ও সংহতি রক্ষায় সর্বশক্তি নিয়োগেও পিছপা হবে না। ভারত ত্যাগ ও সহনশীলতায় বিশ্বাসী। কিন্তু উদ্যম ও আত্মরক্ষার শক্তিও আছে, একথা কেউ যেন ভুলে না যায়।

কয়েক মাস ধরে সীমান্তে দুই দেশের সেনা সমাবেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনও মন্তব্য না করায় কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। সেনা সুত্রে এক সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়েছে সোমবার রাতের চিন-ভারত সেনা সংঘর্ষে ভারতের কুড়ি জন সেনা নিহত হয়েছে, অন্যদিকে চিনের পঁয়তাল্লিশ জন সেনা হতাহত হয়েছে।

সোমবার রাতে এক লেফট্যানেন্ট সহ তিন জওয়ানের নিহত হওয়ার খবরের সত্যতা জানিয়ে বলা হয়, গুরুতর আহত সতেরো জন সেনা প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, সীমান্ত থেকে আলোচনা অনুযায়ী সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে চিনের অনীহা ও আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনা রুখে দাঁড়ায়। চিন সেনাই প্রথমে ভারতের ভূখণ্ডের মধ্যে এগিয়ে আসতে থাকে বলে অভিযোগ।

মে মাসের প্রথম থেকেই ভারত-চিন সীমান্ত বরাবর চারটি স্থানে সেনা সমাবেশ করতে থাকে চিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যেয় ভারতের বিদেশমন্ত্রকের পক্ষে এক বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। অন্যদিকে চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান ভারতীয় সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে বলে যে দাবি করেছেন তার তীব্র প্রতিবাদ করে ভারতের বিদেশমন্ত্রক।

তবে এদিন চিনা বিদেশমন্ত্রকের পক্ষে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে ভারতের সঙ্গে ভবিষ্যতে চিন এমন কোনও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে চায় না। সীমান্ত সমস্যা জটিলকারী কোনও প্ররোচনামূক কাজ, বেআইনীভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা, প্ররোচনামূলক কোনও ভাবভঙ্গি এবং কোনও এক তরফা সিদ্ধান্ত না গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়ার জন্য ভারতীয় সেনাকে সতর্ক করা হয়েছে।

চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিবৃতিতে আরও জানিয়েছেন, উভয় দেশের সীমান্ত আলোচনার মাধ্যমেই মিটিয়ে ফেলা হবে। আমরা আর এমন সংঘর্ষ চাই না। এদিন সীমান্ত সমস্যার সমাধানে ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ওয়াইয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।