দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী সহ আপার বার্থ মাথায় পড়ে অপর এক যাত্রীর মৃত্যু, সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন 

 দিল্লি, ২৭ জুন – দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী সহ আপার বার্থ মাথায় পড়ে অপর এক যাত্রীর মৃত্যু। যাত্রীর মৃত্যুর তদন্তের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে চিঠি দিলেন কেরলের পোনানির সাংসদ আবদুসসামাদ সামদানি। মৃত্যুর তদন্তের পাশাপাশি তিনি রেলমন্ত্রীর কাছে মৃতের পরিবারকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন। এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং অত্যন্ত আপত্তিকর বলে চিঠিতে তিনি বর্ণনা করেছেন।
১৬ জুনের ঘটনা। আলি কান নামের এক বৃদ্ধ কেরলের মলপ্পুরম জেলার মারানচেরি শহরের বাসিন্দা ছিলেন। ওইদিন তিনি তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে এর্নাকুলাম-হজরত নিজামুদ্দিন মিলেনিয়াম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে কেরল থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গালের কাছাকাছি পৌঁছনোর পরই দুর্ঘটনা ঘটে। সেই সময় ট্রেনের লোয়ার বার্থে বসেছিলেন আলি খান। উপরের বার্থে ঘুমোচ্ছিলেন এক যাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আচমকা প্রচণ্ড জোরে আওয়াজ হয়। উপরের বার্থ ভেঙে যাত্রীসহ আলি কানের ঘাড়ের উপর পড়ে । গুরুতর আহত হন আলি কান । খবর দেওয়া হয় হায়দরাবাদ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে। রেলের তরফে তৎক্ষণাৎ আলি খানকে স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর জানা যায়, ওই ব্যক্তির ঘাড়ের তিনটি হাড় ভেঙে গিয়েছে। আলি খানকে এরপর হায়দরাবাদের কেআইএমএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা  চলাকালীন ২৪ জুন মৃত্যু হয় আলি খান নামের ওই যাত্রীর। চিকিৎসকেরা জানান, বৃদ্ধের ঘাড়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি চিকিৎসায় কোনও রকম সাড়া দেননি।
 
যাত্রীদের একাংশের দাবি,  ভেঙে পড়া বার্থটিতে কোনও সমস্যা ছিল। এমনকি এই ঘটনায় রেলের পরিষেবা ও  সুরক্ষা নিয়েও কেন্দ্রকে তোপ দেগেছে কেরল কংগ্রেস।
 
এই পরিস্থিতিতে বুধবার  রেলের তরফে এক বিবৃতি জারি করা হয়। সেই বিবৃতিতে রেলের তরফে  জানানো হয়, ট্রেনের ওই বার্থটিতে কোনও সমস্যা ছিল না। যে যাত্রী ওই আসনটিতে ছিলেন তিনি ঠিকভাবে বার্থ চেন লাগাননি।
 
দুর্ঘটনার পর রেল মন্ত্রকের সরকারি মুখপাত্র গোটা বিষয়টি উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়ার এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন। তিনি লেখেন, ‘উপরের বার্থের চেনটি ভুলভাবে বসানোর কারণে উপরের বার্থের সিটটি নিচে পড়ে যায়। একজন যাত্রী উপরের বার্থের সিটের চেন সঠিকভাবে না লাগানোয়  সিটটি নীচে পড়ে যায়। এটি স্পষ্ট যে সিটটি ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল না, এটি  নিচে পড়েনি বা  ভেঙেও যায়নি । নিজামু্দ্দিন স্টেশনে সিটটি পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং  সিটটি সম্পূর্ণভাবে ঠিক রয়েছে ।’