মধ্যবিত্তের কর ছাড় থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপুল অর্থ বরাদ্দ। শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সংস্কারমুখী বাজেট নিয়ে যখন অনেকেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ, তখন অর্থমন্ত্রীর ঘোষণাকে ‘ধ্বংসাত্মক জনবিরোধী ষড়যন্ত্র’ বলে তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের অর্থ উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ষড়যন্ত্র শব্দটির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অমিত মিত্রের উপলব্ধি, বিমাক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই ৮ শতাংশ জিএসটি নেওয়া বন্ধ হচ্ছে না। এটা একেবারেই পরস্পরবিরোধী। এই ঘোষণার ফলে আন্তর্জাতিক লবিকে সুবিধে পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা, তাদের লাভবান করার জন্যেই এই পদক্ষেপ কিনা তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের অর্থ উপদেষ্টা।
এই প্রসঙ্গে বলা যায়, কেন্দ্রের মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি স্বাস্থ্য-সহ সমস্ত বিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি প্রথম তুলেছিলেন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, যে সমস্ত নাগরিক তাঁদের স্বাস্থ্যের জন্য বিমা করিয়েছেন, তাতে জিএসটি নেওয়া চাপ বৃদ্ধি করা ছাড়া কিছুই নয়। এই নিয়ে নির্মলা সীতারামনকে চিঠিও লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিএসটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে অমিত মিত্রও বারবার বৈঠকে এই প্রস্তাব রেখেছিলেন। আশা ছিল, এবারের বাজেটে হয়ত সেই দিকটা দেখা হবে। কিন্তু এই বাজেটে সেই জিএসটি-র হার শূন্য করা তো দূরে থাক, ১ বা ২ শতাংশও কমানো হয়নি। পাশাপাশিই, বিমা ক্ষেত্র ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। যাকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হিসাবেই দেখছে তৃণমূল। অমিতের কথায়, ‘এই বাজেট বিপর্যয়ের বাজেট। এতে মানুষের জীবনযন্ত্রণা আরও বাড়বে।’
নির্মলার বাজেটে প্রান্তিক এলাকার মহিলাদের জন্য বেশ কিছু সুবিধার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। মহিলা ও শিশুদের পুষ্টি জোগানোর ওই প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি শিশু, ১ কোটি অন্তঃস্বত্ত্বা ও প্রসূতির পাশাপাশি বয়ঃসন্ধিকালীন ২০ লক্ষ মেয়েকেও এবার আনা হয়েছে। যা খুবই নগন্য বলে মনে করছেন অমিত মিত্র। নারীর ক্ষমতায়নে মহিলা অর্থমন্ত্রীর অবদান যে শূন্য, এমন সমালোচনাও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়।
এবারের বাজেটে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলো আয়কর ছাড়ের উর্ধ্বসীমা। যা ৭ লক্ষ টাকা থেকে ১২ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু এই নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ১৪০ কোটির ভারতে কত লোক মাসে ১ লক্ষ টাকা রোজগার করেন? অমিত মিত্রের অভিযোগ মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বিষয়গুলিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বাজেটে।