• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

ধুলোবালি থেকে হাঁপানি, রইল সমাধান 

হাঁপানির অন্যতম কারণ ধুলাবালি৷ বসতঘরে জমে থাকা পুরনো ধুলোবালি ও ময়লা থেকে শিশুসহ সব বয়সি মানুষের সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি হতে পারে৷ আবার রাস্তাঘাটের ধুলোবালিও হাঁপানির কারণ৷ সাধারণত রাস্তার যে ধুলা পাওয়া যায় তা অজৈব পদার্থ— তাতে হাঁচি, কাশি বা হাঁপানির কষ্ট ততটা হয় না৷  কিন্ত্ত ঘরের আবর্জনা ও জমে থাকা ময়লা থেকে অ্যালার্জিক অ্যাজমা

হাঁপানির অন্যতম কারণ ধুলাবালি৷ বসতঘরে জমে থাকা পুরনো ধুলোবালি ও ময়লা থেকে শিশুসহ সব বয়সি মানুষের সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি হতে পারে৷ আবার রাস্তাঘাটের ধুলোবালিও হাঁপানির কারণ৷
সাধারণত রাস্তার যে ধুলা পাওয়া যায় তা অজৈব পদার্থ— তাতে হাঁচি, কাশি বা হাঁপানির কষ্ট ততটা হয় না৷  কিন্ত্ত ঘরের আবর্জনা ও জমে থাকা ময়লা থেকে অ্যালার্জিক অ্যাজমা হতে পারে৷  কারণ তাতে মাইট নামক আর্থোপড জাতীয় জীব থাকে৷

হাঁপানি থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন অ্যালার্জি ও অ্যাজমা রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ভুবন রায় ৷

অ্যালার্জিক অ্যাজমার উৎস মাইট বেড়ে ওঠার উপযুক্ত পরিবেশ হল আর্দ্রতাপূর্ণ আবহাওয়া (৭৫ শতাংশ আর্দ্রতা)৷ বিছানা, বালিশ, কার্পেট হল মাইটের আদর্শ বাসস্থান৷ আমরা সাধারণত দিনের এক-তৃতীয়াংশ সময় বিছানায় কাটিয়ে থাকি৷ সেখানে আমাদের শরীরের ৫০০ মিলিলিটারের বেশি জল ঘামের মাধ্যমে বাষ্প হয়ে নির্গত হয়৷ এ আর্দ্রতা ও গরম আবহাওয়ায় মাইট তাদের জীবন চক্র সম্পূর্ণ করে৷ তাই ধুলোর মধ্যে মিশে থাকা মাইটের শরীর নিঃসৃত রস লালা ও মল সবই একসঙ্গে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং অ্যালার্জির প্রকাশ ঘটায় যা শেষে অ্যাজমার রূপান্তরিত হয়৷ রাতে বিছানায় শোবার সময় আমরা মাইটের সংস্পর্শে আসি এবং তাই রাতে হাঁপানির কষ্ট বেড়ে যাওয়ার এটা অন্যতম কারণ হতে পরে৷
মাইটের মল একটি প্রধান অ্যান্টিজেন, যার ব্যাস ১০-১৪ মিমি৷ এর আয়তন বড় হওয়ার জন্য সবসময় বাতাসে ওড়ে না কিন্ত্ত বিছানা ঝাড়া বা ঘর পরিষ্কার করার সময় বাতাসে ওড়ে এবং নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে৷
আমাদের মতো গ্রীষ্ম প্রধান দেশে ধুলো আক্রান্ত অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বেশি৷ ঋতু পরিবর্তনের ওপর অ্যাজমার প্রকোপ বাড়া-কমা নির্ভর করে৷

প্রতিকার 
ধুলো যেহেতু বাতাসের মধ্যে মিশে থাকে তাই নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরে সবসময় প্রবেশ করছে৷ তাই আমাদের কিছু প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে হবে৷ যেমন বাড়ি থেকে কার্পেট সরিয়ে তুলতে হবে৷ ঘামে ভেজা তোষক ও বালিশের ধুলোয় মাইট বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ, তাই সম্ভব হলে চেন টানা ধুলা প্রতিরোধক ঢাকনা ব্যবহার করা দরকার৷ সম্ভব হলে তোষকের পরিবর্তে মাদুর পেতে শোয়া যেতে পারে৷ অ্যাজমা রোগীদের ঘর নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করা দরকার তবে রোগী যেন বিছানা ঝাড়া বা ঘর পরিষ্কার না করে৷ যদি একান্তই করতে হয় তবে মুখে ফিল্টার মাস্ক ব্যবহার করা উচিত৷ এক সপ্তাহ অন্তর বিছানা গরম জলে  পরিষ্কার করলে তা ধুলার অ্যালারজেনকে ধুয়ে ফেলবে ও মাইট মেরে ফেলতেও সাহায্য করবে৷ ওষুধ ওষুধ প্রয়োগ করে সাময়িকভাবে অ্যালার্জির উপশম পাওয়া যায়৷ এ রোগের প্রধান ওষুধ হল ইনহেলার স্টেরয়েড৷ ইনহেলার স্টেরয়েড ব্যবহারে রোগের লক্ষণ তাৎক্ষণিকভাবে উপশম হয়৷ যেহেতু স্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তাই এ ওষুধ এক নাগাড়ে বেশিদিন ব্যবহার করা যায় না৷ যতদিন ব্যবহার করা যায় ততদিনই ভালো থাকে এবং ওষুধ বন্ধ করলেই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়৷
অ্যালার্জি ভ্যাকসিন অ্যালার্জি দ্রব্যাদি এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি অ্যালার্জিজনিত অ্যাজমা রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি৷  এর মূল উদ্দেশ্য হল যে অ্যালার্জি (মাইট) দিয়ে অ্যাজমার সমস্যা হচ্ছে সেই অ্যালারজেন স্বল্প মাত্রায় শরীরে প্রয়োগ করা হয়৷ ক্রমান্বয়ে সহনীয় বেশি মাত্রায় দেওয়া হয়, যাতে শরীরে অ্যালার্জির কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না দেয়৷ কিন্ত্ত শরীরের ইমিউন সিস্টেমের পরিবর্তন ঘটায় বা শরীরে অ্যালার্জির রিুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে অর্থাৎ আইজিই-কে আইজিজিতে পরিণত করে, যাতে দীর্ঘ মেয়াদি অ্যালার্জি ওষুধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়৷ তাই এ ধরনের অ্যালার্জিক অ্যাজমার ক্ষেত্রে ইমুনোথেরাপি বা ভ্যাকসিন কার্যকর৷