উত্তর প্রদেশে শিক্ষক নিয়োগে বড় দুর্নীতি। গোটা প্যানেল বাতিল করে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ৬৯০০০ হাজার শিক্ষকের প্যানেল বাতিল করা হোক। একই সঙ্গে যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে নতুন প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি এ আর মাসুদি ও বিচারপতি মূর্তি ব্রজরাজ সিংকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ ১২ অগস্ট এই নির্দেশ দিলেও শুক্রবার তা সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়। আদালতের নির্দেশ, মৌলিক শিক্ষা বিধি এবং সংরক্ষণ নির্দেশিকা মেনে তিন মাসের মধ্যে নতুন মেধাতালিকা তৈরির জন্যও রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
২০১৮-র ডিসেম্বরে ৬৯,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি জারি করে উত্তর প্রদেশের শিক্ষা দফতর। ২০১৯ সালে পরক্ষা নেওয়া হয়। শিক্ষক নিয়োগের এই পরীক্ষায় বসেন চার লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী। ২০২০ সালে ফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, ১ লক্ষ ৪৭ হাজার চাকরিপ্রার্থী পাস করেছেন। তার মধ্যে ১ লক্ষ ১০ হাজারই সংরক্ষিত শ্রেণির (তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি এবং অন্যান্য)।
মেধাতালিকা প্রকাশ হতেই বিভিন্ন অভিযোগ উঠে আসে। ১৯ হাজার প্রার্থী সংরক্ষণের সুবিধা পাননি বলে দাবি করেন চাকরিপ্রার্থীরা। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে মামলা হয়। দীর্ঘ শুনানির পর পুরো মেধাতালিকাই বাতিল করল এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চের বিচারপতি এ আর মাসুদি ও বিচারপতি মূর্তি ব্রজরাজ সিংয়ের বেঞ্চ।
২০২০ সালে ৬৯০০০ সহকারী শিক্ষকের এই নিয়োগে, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) বিভাগে ২৭ শতাংশের পরিবর্তে মাত্র ৩.৮৬ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তফশিলি জাতির চাকরিপ্রার্থীদের ২১ শতাংশের পরিবর্তে ১৬.২ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছি। এই দুটি ক্ষেত্রেই বেসিক এডুকেশন রুলস ১৯৮১ এবং রিজার্ভেশন রুলস ১৯৯৪ লঙ্ঘন করা হয়।
উত্তর প্রদেশের শিক্ষা দফতরের এই খামখেয়ালিপনার জেরে প্রায় ১৯০০০ হাজার চাকরিপ্রার্থী বঞ্চিত হন। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ কেলেঙ্কারিতে যুক্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। এক বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীর কথায়, ‘আমাদের ন্যায়বিচার দিতে হবে এবং যেসব প্রার্থী অবৈধভাবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে।’