উপত্যকা সহ রাজ্যের সর্বত্র উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি সর্বদলীয় বৈঠক করলেন। তিনি টুইট করেছিলেন, অমরনাথ যাত্রী ও পর্যটকদের উপত্যকা থেকে সরিয়ে দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয়েছে। পাশাপাশি কাশ্মীরিদের নিরাপত্তা ও ত্রাণসামগ্রী পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেনি।
নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা মােকাবিলায় গত দু’সপ্তাহ ধরে ৩৫,০০০ কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে অতিরিক্ত বাহিনী মােতায়েন করা নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তার সঙ্গে গােদের ওপর বিষ ফোড়ার মতাে জম্মু ও কাশ্মীরকে দেওয়া স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস কেন্দ্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
তিনি দাবি করেন, ‘পুলিশ স্থানীয় কোনও হােটেলে বৈঠক করার অনুমতি দেয়নি। রাজনৈতিক দলগুলি হােটেলে বৈঠক করবে বলে ঠিক করেছিল। পুলিশ হােটে ল মালিকদের নির্দেশ দিয়েছে, যাতে কোনও রাজনৈতিক দলকে হােটেলে বৈঠক করতে না দেওয়া হয়। তাই সন্ধ্যে ৬ টায় আমার বাড়িতে বৈঠক ডেকেছি’।
তিনি টুইট করে লেখেন, ‘অমরনাথ যাত্রী, পর্যটক, শ্রমিক, পড়ুয়া ও ক্রিকেটারদের উপত্যকা থেকে চলে যেতে বলে সকলের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু কাশ্মীরিদের নিরাপত্তা দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি’।
জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, যে রুটে তীর্থযাত্রীদের পাঠানাে হচ্ছে সেখানে ল্যান্ডমাইন ও স্নিপার রাইফেল পাওয়া গেছে। ফলে কোনওভাবেই তীর্থ যাত্রীদের অমরনাথ যাত্রায় পাঠানাে যাবে না। ৩৫,০০০ নিরাপত্তারক্ষী মােতায়েন করা হয়েছে।
তীর্থযাত্রীদের ওপর আগেও চারবার হামলা চালানাে হয়েছিল। ২০০০ সালে পহেলগামে বেসক্যাম্পে জঙ্গি হামলা ৩২ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। গুরুতর জখম ৬০। ২০০১, ২০০২, ২০১৭ সালে অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের ওপর হামলা চলেছিল।
জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের তরফে দেওয়া সতর্কতার কঠোর সমালােচনা করেন মেহবুবা মুফতি, ন্যাশানাল কনফারেন্স প্রধান। ওমর আবদুল্লা ও কংগ্রেস। তাঁরা বলেন, প্রশাসনের তরফে দেওয়া সতর্কতার জেরে উপত্যকা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পর্যটকরা ফিরে যাচ্ছেন, খাবার ও জল কেনার জন্য দোকানের বাইরের লম্বা লাইন পড়েছে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যে ব্রিটেন ও জার্মানি প্রশাসন নাগরিকদের কাশ্মীরে যেতে নিষেধ করেছে। আর যারা রয়েছেন তাদের দ্রুত ফিরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সেনা বাহিনীর তরফে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিমের পাঁচ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তারা ভারতে অনুপ্রবেশ করে সেনা ছাউনিতে হামলা করার চেষ্টা করেছিল। গােয়েন্দারা জানিয়েছেন, ২৯ জুলাই থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জঙ্গিরা। নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কেরন সেক্টর দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল।