হায়দরাবাদে চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনে ৪ অভিযুক্তই এনকাউন্টারে মৃত

এনকাউন্টারের ঘটনাস্থলে সাইবেরাবাদ পুলিশ। (Photo: IANS)

হায়দরাবাদের পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চার অভিযুক্তকে এনকাউন্টারে খতম করল সাইবেরাবাদ পুলিশ। যেখানে নিগৃহীতার গায়ে পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ঘটনার পুননির্মাণের জন্য শুক্রবার ভােররাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল চার অভিযুক্তকে। পুলিশ জানিয়েছে, তখনই পালানাের চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। তখনই শুরু হয় এনকাউন্টার। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় চার অভিযুক্তেরই। 

পুলিশের শীর্ষ সুত্র এই খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছে, অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফ, নবীন, শিবা ও চেন্নাকোভুলুর এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের দাবি, ভাের রাতে ঘটনার পুননির্মাণ করার জন্য অভিযুক্তদের অপরাধস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখনই পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে হেফাজত থেকে পালানাের চেষ্টা করে চার অভিযুক্ত। তখনই ৪৪ নং জাতীয় সড়কের উপর শুরু হয় এনকাউন্টার। 

২০ থেকে ২৪ বছর বয়সি চার লরিচালককে পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযােগে ২৯ নভেম্বর গ্রেফতার করে পুলিশ। গত শনিবার তাদের ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় আদালতে পাঠানাে হয়। দ্রুত তাদের কড়া শাস্তির দাবিতে দেশজুড়ে দাবি উঠেছিল। এই মামলার শুনানির জন্য বুধবার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করে তেলেঙ্গানা সরকার। বৃহস্পতিবার ভাের ৬টা নাগাদ মেয়েটির দেহ দেখতে পান দুধের ভেন্ডর এস সত্যম। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।


একে খুনের ঘটনা বলে জানিয়ে সাইবেরাবাদ পুলিশ নিখোঁজ ডায়েরিগুলি খতিয়ে দেখে। পরিবারকে ডেকে পাঠানাে হলে সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া দেহের স্কার্ফ ও মৃতার গলায় গণেশের লকেট দেখে দেহ শনাক্ত করেন আত্মীয়-স্বজনেরা। 

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার বাইকটি কোথুর থেকে পাওয়া গিয়েছে, তবে তার পার্স ও মােবাইলের হদিশ মেলেনি। তবে বাইকের নম্বর প্লেটটি পাওয়া যায়নি। দেহ যেখান থেকে মিলেছে, সেই টোল প্লাজা থেকে প্রায় ষ্ম কিমি দূরে কোথুরে বাইক চালিয়ে ফেলে আসার সময় নম্বর প্লেটটি খুলে রাখে অভিযুক্ত। 

বিকেল ৫:৩০-এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে ত্বকের ডাক্তারকে দেখাতে গিয়েছিলেন ওই যুবতী। শামশাবাদের একটি টোল প্লাজায় নিজের বাইকটি রেখে একটি ক্যাবে চড়ে সেই হাসপাতালে যান তিনি। জানা গিয়েছে, কিছুক্ষণ পর ফিরে টোল প্লাজা থেকে বাইক নেওয়ার সময় তাকে দুজন বলেন বাইকের চাকাটি পাংচার হয়ে গিয়েছে। সারানাের জন্য কাছেরই একটি দোকানে নিয়ে যেতে হবে। সেই সময় কয়েক মিটার হেঁটে একটি নির্জন জায়গায় দাঁড়িয়ে মেয়েটি অপেক্ষা করতে থাকেন। সেখানে বেশ কয়েকটি ট্রাক পার্ক করা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

মৃতার বােন জানান, ৯:২২-এ বােন ফোন করেছিল। ও বলে দুজন টায়ার সারিয়ে দেবে বললেও- সারিয়েই ফিরে এল। কাছেই কয়েকটি লরি নিয়ে বেশ কয়েকজন দাঁড়িয়ে ছিল বলেও জানায়। ও বলে খুব ভয় পাচ্ছে। আমি ওকে বাইক রেখে দিয়েই চলে আসতে বলি। এরপর মৃতার বােন ৯:৪৪-এ ফের ফোন করার চেষ্টা করলে শােনা যায় ফোন সুইচড অফ। রাতে বােন বাড়ি না ফেরায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। কখন কীভাবে মেয়েটিকে খুন করা হল, তা নিয়ে পুলিশ এখনও সন্দিহান। পুলিশের অনুমান, ওই পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করে তার দেহ একটি ব্যাগে ভরে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।