আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু মর্যাদা সংক্রান্ত মামলায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সংখ্যালঘু’ তকমা পাবে না বলে আগেই জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট তার আগের নির্দেশ খারিজ করে জানিয়েছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয় ‘সংখ্যালঘু’ প্রতিষ্ঠানের তকমা পাবে কি না তা নতুন ভাবে গঠিত তিন বিচারপতির বেঞ্চ ঠিক করবে।আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের তকমা পাওয়ার পক্ষে সহমত হয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র। সহমত নন বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি এসসি শর্মা।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ তার রায়ে জানিয়েছিল, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের তকমা পাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের। ওই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ সাহায্য পায়।
শুক্রবার এই মামলায় চারটি পৃথক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। বেঞ্চের নেতৃত্বে থাকা প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় শুরুতেই বলেন যে, বিচারপতিদের তিনটি ভিন্নমতের রায়-সহ চারটি পৃথক মতামত রয়েছে। চন্দ্রচূড় এদিন বলেন, একটি সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান অবশ্যই সংখ্যালঘুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হতে হবে। একই সঙ্গে সংবিধান অনুযায়ী সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান ধারা ৩০-এর অধীনে সমান সুরক্ষা পাবে। তাঁর কথায়, আদালত একটি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যালঘু মর্যাদা অস্বীকার করতে পারে না। কারণ এটি একটি সংসদীয় আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংখ্যালঘু ব্যক্তিরা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলেই সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে তা নয়। প্রতিষ্ঠানটিকে সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রমান করার জন্য তার প্রশাসন সংখ্যালঘুদের উপরই নির্ভরশীল হতে হবে তা প্রমান করার প্রয়োজন নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে জোর দেওয়া হয়েছে যে , প্রতিষ্ঠানটি সংখ্যালঘুদের স্বার্থে কাজ করে কিনা সেটাই বড় পরীক্ষা।
১৮৭৫ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই সময় প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল মহমেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ। স্যর সৈয়দ আহমেদ খানের নেতৃত্বে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট কয়েকজন তার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯২০ সালে ব্রিটিশ ভারতে ওই প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। ১৯৫১ সালের আগে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দেওয়া হতো।