আরজি কর কাণ্ডে তাঁর পাশ থেকে সরে গিয়েছেন অনেকেই। এমনকি দু’দিন আগে যে প্রিয়াঙ্কা বড়রাকে মুখ্যমন্ত্রী মমতার হয়ে বলতে দেখা গিয়েছিল তিনিও আজ এই কাণ্ডে নিন্দায় সরব। রাহুল গান্ধিও বিরোধিতা করেছেন। ‘স্থানীয় প্রশাসন’কে কাঠগড়ায় তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। কংগ্রেসের রাজ্য নেতারাও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন। শুধু রাজ্য নয় গোটা দেশ জুড়ে আরজি করে ডাক্তারি পড়ুয়া তরুণীর ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টেও মুখ পড়েছে রাজ্য পুলিশ বকলমে রাজ্য সরকারের। ঠিক এমন সময়েই মমতার পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল ইন্ডিয়া জোটের আরেক সঙ্গী তথা সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবকে।
আরজি কর কাণ্ডে মমতার পাশে দাঁড়িয়ে অখিলেশ যাদব শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে একজন মহিলা। তিনি খুব ভালো করে বোঝেন একজন মহিলার যন্ত্রণা। তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন। সরকারই চেয়েছে সিবিআই বা অন্য কোনও এজেন্সি এই বিষয়টির তদন্ত করুক। কিন্তু একই সঙ্গে বলতে হবে, বিজেপির এই নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।’
এদিন অখিলেশ এই ঘটনায় বিজেপিকে দুষে বলেন, ‘মমতাকে ফাঁসাতে বাড়াবাড়ি করছে বিজেপি।’ উত্তরপ্রদেশের লখনউ-এর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে অখিলেশ বলেন, শোনভদ্রে যখন মেয়ের ধর্ষণের পর তার দলিত মা সিএম দরতরে অগ্নিসংযোগে আত্মহত্যা করেছিল তখন বিজেপি একটা শব্দও খরচ করেনি। এমনকি এই ঘটনা জনসম্মুখে আনা সাংবাদিকের ওপরই মামলা দায়ের করে। আর কলকাতার ঘটনায় যখন মমতাদির সরকার সমস্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে তখন বিজেপি মানুষকে উস্কে রাজনীতিতে নেমেছে।’
তৃণমূল অবশ্য শুরু থেকেই বলে আসছে তদন্তে কোনও গাফিলতির প্রশ্ন নেই। আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি চায় শাসকদলও। খোদ মুখ্যমন্ত্রী দোষীদের ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। সিবিআইকে অবিলম্বে তদন্ত শেষ করতে হবে বলে সরব হয়েছেন। একই সঙ্গে শাসকদলের অভিযোগ, রাজ্যের ‘বাম-রাম’ শিবির এই পরিস্থিতিতে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। অখিলেশও খানিকটা সেই সুরেই শাসকদলের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে বিঁধলেন। ইন্ডিয়া জোটের অন্দরে তৃণমূলের সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির সমীকরণ কতটা মসৃণ, সেটা আরও একবার স্পষ্ট হল।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ড নিয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলছে বিজেপি। সেই সঙ্গে সুর মেলাচ্ছে বাম এবং কংগ্রেসও। বিরোধীদের দাবি, সরকারের তরফে তদন্তে গাফিলতি হয়েছে। মূল অপরাধীকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। এই অভিযোগে মমতার পদত্যাগ দাবি করেছে তারা। রাজ্যের আমনাগরিক, বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশও এই অভিযোগে পথে নেমেছেন।