গত ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর সন্ধ্যাবেলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলের ঘোষণা করেন। এরপর ৯ নভেম্বর রাত ১২টার পর থেকে তা কার্যকর হয়। ওই বিশেষ দিনেই জন্ম নেন খাজাঞ্চি যাদব নামের একটি শিশু পুত্র। আজ, সেই ঐতিহাসিক ৯ নভেম্বর। নোট বাতিলের ৮ম বর্ষ পূর্তি। আর সেই হিসেবে খাজাঞ্চি যাদবেরও বয়স আট বছর পূর্ণ হল। অর্থাৎ ৯ম জন্মদিন।
আর এই বিশেষ দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে খাজাঞ্চির জন্মদিনকে ধুমধাম করে পালন করা হয়। এবছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর তার অন্যথা হয়নি। বর্তমান সমাজবাদী সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব এবং দলের নেতা নেত্রীরা এই শিশুটির যথেষ্ট সমারোহে জন্মদিন পালন করেন। সঙ্গে ছিলেন শিশুটির পরিবারের সদস্যরাও। সবার সামনে এক প্লেট লাড্ডু সাজিয়ে রাখা হয় জন্মদিনের এই বিশেষ অনুষ্ঠানে। খাজাঞ্চি সেই প্লেট থেকে মুখে তুলে নেয় একটি লাড্ডু। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় হাততালি। এভাবে তার জন্মদিন পালন করা হয়।
জানা গিয়েছে, প্রতি বছর খাজাঞ্চির জন্মদিন সমাজবাদী পার্টির দপ্তরেই করা হয়ে থাকে। এবারও সেই অনুষ্ঠানে অখিলেশ যাদব উপস্থিত ছিলেন। অখিলেশ নিজে হাতে তাঁকে মিষ্টি খাওয়ান এবং একটি সাইকেল উপহার দেন।
তবে এই জন্মদিন যে নিছক ওই বিশেষ দিনে জন্ম বলেই পালন করা হচ্ছে, এমন নয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এর পিছনে রয়েছে অনেক রাজনৈতিক সমীকরণ। কার্যত শিশুটির জন্মদিন পালনের মাধ্যমে মোদীর নোট বাতিলের সমস্যাকে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরায় ছিল মূল উদ্দেশ্য। দেশের মানুষকে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া, নোট বাতিলের ফলে মানুষ যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর নোট বাতিলের ঘোষণার ফলে সেই সময়ে বাজারে চালু থাকা ৫০০ ও হাজার টাকার নোটে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। মোদী সরকারের লক্ষ্য ছিল, দেশকে কালো টাকা মুক্ত করা এবং সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করা। সেজন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মানুষকে সরকারের কাছে ওই নোট ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিনিময়ে বাজারে আসে ৫০০ ও ২০০০ টাকার নতুন নোট। সেজন্য এই নোট বদল করতে বা ব্যাংকে জমা দিতে প্রায় গোটা দেশবাসী ব্যাংকের লাইনে সামিল হন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয় দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। আবার দেশের মানুষ কেউ কেউ এই সিদ্ধান্তের পক্ষে এবং কেউ কেউ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেন। অনেক বয়স্ক মানুষ নোট বদল করতে গিয়ে ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে একাধিক অভিযোগ আসে।
এদিকে সরকারকে আয়কর ফাঁকি দেওয়া বহু অবৈধ ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাদের বাড়ি ও অফিসে মজুত করা কালো টাকা বেনামে ব্যাংকে জমা দিতে শুরু করেন। অনেকে সেই টাকার সদ্গতি করতে না পেরে চুপি চুপি বাগানে বা খালের ধারে ফেলে আসেন। আবার কেউ কেউ বাড়িতে সেই টাকা পুড়িয়ে দেন বলে গোপন সূত্রে খবর আসতে থাকে।