দুঃসংবাদ, শনিবার সকালের ফোন পেয়ে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের প্রতিক্রিয়া এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক–কাকা-ভাইপাে সম্পর্কে চিড় ধরিয়ে অজিত পাওয়ার এখন মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী পদে ফড়নবিশের শপথ গ্রহণের খবরটা শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেস নেতৃত্বকে রীতিমতাে চমকে দেয়। তার মধ্যে আগুনে ঘি ঢালার মতাে খবর অজিত পাওয়ার উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারকে অপসারিত করা হল। সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই জানালেন শরদ পাওয়ার। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষা করতে ব্যর্থ হবে। রাজভবনে ১১ জন এনসিপি বিধায়ক অজিত পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করতে গেছিলেন। কিন্তু তিন জন ফিরে এসেছেন’।
এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে ও আদিত্য ঠাকরেকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সম্মেলনে ভাইপাে অজিত পাওয়ারের ওপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অজিতের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুধু তাই নয়, দলের অন্য বিধায়কদেরকে সতর্ক দলত্যাগ বিরােধী আইন সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেন।
বিজেপি’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে অজিত পাওয়ার মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের নেপথ্যে নায়কের প্রাসঙ্গিকতা পেয়ে যাওয়াও স্বভাবতই এনসিপি শিবিরে ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘দলের নেতাদের বৈঠকে অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে কি ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি অজিতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ওঁর সিদ্ধান্ত দলের নিয়মানুবর্তিতা লঙঘন করেছে। প্রত্যেক বিধায়ককে মনে রাখতে হবে দল ত্যাগ বিরােধী আইন বলে একটা ব্যাপার রয়েছে। তাদের কিন্তু বিধানসভার সদস্যপদ খােয়ানাের সম্ভাবনা প্রবল’।
তিনি বলেন, ‘আজ সকাল থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে। কংগ্রেস ৪৪টি, শিবসেনা ৫৬টি ও এনসিপি ৫৪টি আসন পেয়েছে। এছাড়াও প্রচুর নির্দল বিধায়ক আমাদের সমর্থনে রয়েছেন। মােট সংখ্যাটা ১৭০ জন হবে’।
তিনি বলেন, ‘দলের এক সহকর্মী ভাের পৌনে সাতটার সময়ে ফোন করে বলেন যে, অজিত পাওয়ার সহ কয়েকজন বিধায়ক রাজভবনে গেছেন। আমি তাে শুনে অবাক হয়ে যাই, রাজ্যপালের অফিস এত ভােরবেলা কিভাবে শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল। তবে এটা দেখে ভালাে লাগল যে, রাজ্যপাল এত দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে পারেন’।
শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে বলেন, গভীর রাতে মহারাষ্ট্রের ওপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানাে হয়েছে। রাজ্যের মানুষ প্রতিশােধ নেবেন। দল ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এরপর কি আর দেশে কোনও নির্বাচন করার দরকার আছে। প্রথমে ইভিএম কারচুপির খেলা চলছিল। এখন নতুন খেলা শুরু করেছে। আমি মনে করি এখন থেকে দেশে আর কোনও নির্বাচন করার প্রয়ােজন নেই। সকলে জানেন ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের সঙ্গে যখন বিশ্বাস ঘাতকতা করা হয়েছিল, তখন উনি কি করেছিলেন।
এনসিপি বিধায়ক রাজেন্দ্র সিঙ্গনে বলেন, ‘অজিত পাওয়ার রাতে ফোন করে ভাের ছটার সময়ে বাসভবনে আসতে বলেছিলেন। আমি যখন পৌছই তখন দশজন বিধায়কও জড়াে হয়েছিল। আমাদেরকে রাজভবনে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত কেউ জানতাম না কেন আমাদের নিয়ে আসা হল। শপথ গ্রহণ শুরু হতেই আমি ওখান থেকে বেরিয়ে শরদ পাওয়ারের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে এনসিপির সঙ্গে থাকার কথা জানাই।