সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অভিনেত্রী মিমি

কলকাতা, ১৫ ফেব্রুয়ারি: অভিনেতা দেবের পর এবার রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে মিমি চক্রবর্তী। একাধিক সমস্যার কথা জানিয়ে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দাবি করেছেন এই অভিনেত্রী। যদিও এই আবেদন সংসদে এসে না পৌঁছলেও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন। জানা গিয়েছে, আজ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন অভিনেত্রী মিমি। সেই বৈঠকের সময় তৃণমূলনেত্রীকে বলেন, তিনি আর প্রার্থী হতে চান না। এমনকী রাজনীতিতেও আর থাকতে চান না।

এরপর সেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে মিমি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পলিটিক্স আমার জন্য নয়। গালাগালি খেতে হচ্ছে। আমি রাজনীতির লোক নই। আমি কোনওদিন খারাপ কথা বলিনি। কিন্তু অনেক খারাপ কথা শুনতে হয়েছে আমাকে। সংসদে আমার যাওয়া নিয়েও কথা শুনতে হয়েছে। তাই আমি রাজনীতিতে থাকতে চাই না। প্রার্থীও হতে চাই না। আমি গালাগালি খাওয়ার মতো কোনও কাজ করিনি। করোনার সময় আমি বাড়ি বাড়ি গিয়েও কাজ করেছি।’

মিমি এদিন দাবি করেন, তিনি লোকসভায় আর প্রার্থী হতে চান না। দু’দিন আগেই তিনি পদত্যাগপত্র মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী সেই ইস্তফাপত্র এখনও গ্রহণ করেননি। তিনি ইস্তফাপত্র গ্রহণ করলেই লোকসভার স্পিকারের কাছে সাংসদ পদে তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে আসবেন।


উল্লেখ্য, আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মমতা যখন বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, সেসময় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে যান মিমি। এরপর ওই ঘরে আসেন দলের অন্য দুই তারকা বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী ও জুন মালিয়া। বক্তৃতা শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী নিজের ঘরে আসতেই মিমি ও বাকি তারকাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা।

এদিন মিমি বলেন, ‘‘আমার যা বলার ছিল, দিদিকে বলেছি। অনেকে বলছিলেন, আমি পরবর্তী টিকিট পাকা করার জন্য এটা করছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতি আমার জন্য নয়।’’ মিমি আরও দাবি করেন, ২০২২ সালেও তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পদ ছাড়ার অনুমতি দেননি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি সংসদের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যপদ ছিলেন। তিনি সেই দুটি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি সংসদের শিল্পবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ছিলেন। ছিলেন কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রক, নবীন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ মন্ত্রকের যৌথ কমিটির সদস্য। এই দু’টি পদ থেকেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। এরপর জানা গিয়েছে, যাদবপুর লোকসভার অধীন নলমুড়ি এবং জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন পদও ছেড়ে দিয়েছেন। এরপর তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়। ২০২৪ সালে তিনি যাদবপুর থেকে আর প্রার্থী হবেন কিনা, তা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে।