• facebook
  • twitter
Monday, 16 September, 2024

ধর্ষণবিরোধী আইনের পক্ষে ফের জোরালো দাবি অভিষেকের

প্রতি ১০০টি ধর্ষণে ৭৪ জন অভিযুক্ত শাস্তিই পায় না!

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলে রণক্ষেত্রের রূপ ধারণ করে শহর-কলকাতার রাজপথ। এর মাঝেই ধর্ষণবিরোধী আইনের পক্ষে ফের জোরালো দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। মঙ্গলবার একটি ‘কোলাজ’ এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন অভিষেক। তবে ‘কোলাজ’টি কিসের? আরজি করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৯ অগস্ট। তারপর থেকে ১৫ দিনে লাগাতার দেশে যে সমস্ত ধর্ষণের ঘটনা সংবাদমাধ্যমের নজরে এসেছে, তারই একটি ‘কোলাজ’ তৈরি করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের পোস্ট করা কোলাজে রয়েছে ২৪টি যৌন নির্যাতনের খবর। তিনি এ প্রসঙ্গে লিখলেন, গোটা দেশ ধর্ষণের বিচার চেয়ে আন্দোলন করছে। অথচ, এই কোলাজটিই বলে দিচ্ছে এই মুহূর্তে ভারতের পরিস্থিতি আসলে কী রকম? দেশে এই মুহূর্তে ধর্ষণবিরোধী আইনের প্রয়োজন। কারণ, পরিসংখ্যান বলছে দেশে প্রতি ১০০টি ধর্ষণের ঘটনায় ৭৪ জন শাস্তিই পান না!

নির্দিষ্ট কোলাজের শিরোনামে লেখা রয়েছে, ‘আরজি করের ঘটনার পর থেকে ১৫ দিনে মহিলাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং শারীরিক অত্যাচারের একাধিক ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে।’ স্পষ্ট তথ্য পেশ করে এদিন অভিষেক লিখেছেন, ‘ভারতের এই পরিস্থিতির জবাব একটাই, কঠোর ধর্ষণবিরোধী আইন প্রয়োজন, যা ৫০ দিনের মধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্তের শুনানি এবং দোষী সাব্যস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কার দেশে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করার হার মাত্র ২৬ শতাংশ।’ অর্থাৎ, পুলিশের কাছে রিপোর্ট দায়ের হওয়া প্রতি ১০০টি ধর্ষণের ঘটনায় ২৬ জন দোষী সাব্যস্ত হন। বাকি ৭৪ জন ধর্ষণের শাস্তিই পান না।

অভিষেকের ভাষায়, ‘আমাদের যদি এই অপরাধের শিকারদের সুবিচার পাইয়ে দিতেই হয়, তবে অবিলম্বে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমাদের একটি সময় নির্দিষ্ট ধর্ষণবিরোধী আইনের দাবি জানাতে হবে। তা ছাড়া বাকি সব কিছুই সারবত্তাহীন প্রচেষ্টা হবে। এবং আদতে কোনও কাজ হবে না।’ উল্লেখ্য, কোলাজে থাকা ২৪টি যৌন নির্যাতনের খবর রয়েছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের। টুকরো খবরগুলির শিরোনামের কোথাও লেখা যোধপুরে এক মন্দিরের বাইরে শুয়ে থাকা তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের কথা। কোথাও লেখা অসমে ১৪ বছরের কিশোরীকে টিউশন পড়ে ফেরার পথে ধর্ষণ। আবার ওড়িশায় দুই রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আইসিইউয়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এই জটিল পরিস্থিতিতে দেশে ধর্ষণবিরোধী আইন আনাই একমাত্র উপায় ধর্ষণের মতো অপরাধকে নিয়ন্ত্রণ করার, দাবি অভিষেকের।

প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে অভিষেকের তৃতীয় পোস্ট এটি। আরজি করের ঘটনা নিয়ে অভিষেক প্রথম মুখ খুলেছিলেন আমতলায় প্রশাসনিক বৈঠক শেষে। ধর্ষণে অভিযুক্তদের সাত দিনের মধ্যে এনকাউন্টার করার নিদান শুনিয়েছিলেন। এরপর ১৪ অগস্ট রাতে ‘মেয়েদের রাত দখল’ আন্দোলনের সময় আরজি করে ভাঙচুরের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি এবং এক্স মাধ্যমে আরজি কর কেন্দ্রিক প্রথম পোস্ট করেছিলেন। তারপরে গত ২২ অগস্ট দেশে ধর্ষণের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে দ্বিতীয় পোস্ট করেছিলেন অভিষেক। সেই পোস্টে ধর্ষণবিরোধী আইন আনার দাবি করেছিলেন তিনি। এও বলেছিলেন, ওই আইনের জন্য রাজ্য সরকারকেই চাপ দিতে হবে কেন্দ্রের উপর। অভিষেকের ওই পোস্টের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধর্ষণবিরোধী আইন চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠিও লিখেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এবার সেই পোস্টের পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার সকালে সমাজমাধ্যমে আরজি কর এবং দেশে ধর্ষণবিরোধী আইন আনার বিষয়ে নিজ দাবিকে ফের জোরালো করলেন তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।