মমতা ‘একলা চলো’ বলতেই আপ জানাল ‘বাংলায় আসন সমঝোতা কঠিন’

আতঙ্কিত হতে নারাজ ইন্ডিয়া জোট শরিকরা, অবাক নয় জানাল শিব সেনা
মুম্বই, ২৪ জানুয়ারি– দেশের বিজেপি বিরোধী দলগুলি যখন ইন্ডিয়া জোট গড়ার ঘোষণা করে তার সবথেকে আগের সারিতে দেশের যে সমস্ত নেতাদের দেখা গিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যদিও তারপর বিভিন্ন রাজ্যে আসন সমঝোতার প্রশ্নে কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধ বাধে বেশ কিছু দলের৷ বাংলাতেও সেই একই সমস্যা দেখা দেয়৷ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটি বার-বার মমতাকে গুরুত্ব দিয়ে আসান সমঝোতার কথা ভাবলেও রাজ্যে তা মানতে রাজী নয় কংগ্রেসের কর্মীরা৷ অন্যদিকে কংগ্রেস থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে তৎপর বাংলার তৃণমূল কংগ্রেসও৷ আর কর্মীদের সেই সিদ্ধান্তকে শিলমোহর দিয়েই বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা ‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নয়’৷
লোকসভায় মমতার এই ‘একলা চলো’র বার্তার পরই বোঝা গেল বিরোধীদের জন্য তা কতবড় ধাক্কা৷ কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আগেই ঘোষণা করেছিলেন মমতা ইন্ডিয়ার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ৷ মমতার মতো প্রভাবশালী নেত্রী জোট ছেড়ে বেরিয়ে গেলে ‘ইন্ডিয়া’র ভবিষ্যৎ নিয়ে যে প্রশ্ন উঠে যাবে৷
মমতার এই ঘোষণার পরই শুরু হয়ে গিয়েছে হইচই৷ ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ নানান দলগুলি ইতিমধ্যেই তাদের মতামত জানাতে শুরু করেছে এই বিষয়ে৷

কংগ্রেসের সঙ্গে প্রথম থেকেই দ্বন্দে থাকা দিল্লির আম আদমি পার্টি তাদের পথে হেঁটেই জানিয়েছে, ‘বাংলায় আসন সমঝোতা কঠিন৷’ বাংলায় বাম-কংগ্রেস চুক্তি মনে করিয়ে আপের বক্তব্য, দীর্ঘদিন বাংলায় বাম এবং কংগ্রেসকে এক হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে দেখা গিয়েছে৷ এখন সেখানকার কর্মীরা স্বভাবতই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা মেনে নেবেন না৷ আর দিদি তৃণমূল কর্মীদের এই মতকে নিশ্চই গুরুত্ব দেবেন তাই কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের আসন সমঝোতা বেশ কঠিন৷ কিন্ত্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাহুল গান্ধি দুজনেই বিজেপিকে হারাতে সচেষ্ট৷ বিহারের শাসক দল আরজেডিও বলছে, সময় দিলে এই সমস্যা মিটে যাবে৷ যদি কোনও সমস্যা থেকেও থাকে, সেটা আমরা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেব৷” আবার অন্যদিকে যে কংগ্রেসকে নিয়ে মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের এই ঘোষণা সেই কংগ্রেস এখনও তৃণমূলের সঙ্গে জোটের আশা ছাড়তে নারাজ৷ হাত শিবির স্পষ্ট করে দিয়েছে, ‘তৃণমূল এবং কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোটের শক্ত দুই স্তম্ভ৷ তৃণমূলকে ছাড়া ইন্ডিয়া জোট ভাবাই যায় না৷ বাংলায় আমরা জোট হিসাবেই লড়ব৷ বিজেপিকে হারাতে যা করার করব৷’
যদিও ইন্ডিয়া জোটের অন্য শরিকেরা এখনই আতঙ্কিত হতে নারাজ৷ এদিন মমতার ঘোষণার পরই শিব সেনার উদ্ধব শিবির বলছে, তারা আগেই জানত মমতা এরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ তবে এর ফলে জাতীয় স্তরে বা মহারাষ্ট্রে ইন্ডিয়া জোটে কোনওরকম প্রভাব পড়বে না৷ শিব সেনার সূত্র বলছে, মমতার এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিত ছিল৷ আসলে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর জোটের বিশেষ সুযোগ ছিল না৷ তবে মহারাষ্ট্রে এই জোট অক্ষত৷ অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের আরেক দল এনসিপির শরদ পওয়ার শিবির আবার বলছে, মমতার এই সিদ্ধান্ত হয়তো কৌশলগত৷ এনসিপির এক মুখপাত্রর কথায়, মমতা ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী৷ তিনি এই সিদ্ধান্ত নিশ্চয় কোনও কৌশলগত জায়গা থেকে নিয়েছেন৷”