দিল্লি, ২৪ জানুয়ারি– বুধবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিয়েছেন, বাংলায় সব আসনে একাই লড়বে তৃণমূল৷ অর্থাৎ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের আসন সমঝোতার ঐক্য প্রায় শেষ৷ মমতার এই বার্তার পর পরিষ্কার হয়ে গেল যে বাংলায় আসন সমঝোতার ব্যপারে কংগ্রেসের আর কোনও আশাই রইল না৷ আর মমতার এই ঘোষণার পরই কংগ্রেসকে আরেক ধাক্কা দিল দিল্লির শাসক দল আপ৷ এ বার কংগ্রেসকে চাপে ফেলে দিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)৷ বুধবার পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ নেতা ভগবন্ত মানের ইঙ্গিত, আগামী লোকসভা ভোটে পঞ্জাবের ১৩টি কেন্দ্রেই একক শক্তিতে লড়তে চান তাঁরা৷ মান এদিন কংগ্রেসকে নিজের ক্ষমতা বুঝিয়ে বলেন, ‘পঞ্জাবে আমরা একার শক্তিতেই লড়ার এবং জেতার ক্ষমতা রাখি৷’ আপ সূত্র মতে, ভাগবত শুধু একা লড়তে চাওয়ার ইচ্ছাই প্রকট করেননি ইতিমধ্যেই দলের পঞ্জাব নেতৃত্বের তরফে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ার বিষয়ে আপত্তির কথা জানানো হয়েছে কেজরীকে৷
তবে একসপ্তাহ আগেই আপ-কংগ্রেসের বন্ধুত্বের আরেক চিত্র দেখা গিয়েছিল চণ্ডীগডে়৷ সেখানে মেয়র নির্বাচনে বিজেপিকে হারানোর জন্য আপ-কংগ্রেসের জোট বেঁধে লড়ার ঘোষণা ইন্ডিয়া জোটকে নতুন আশা দেখিয়েছিল৷ যদিও সেই চণ্ডিগড়ের সেই জোট টেকে নি৷
তারপর বুধবারই মানের এই বার্তায় বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্দরের ফাটল আরও চওড়া হল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা৷ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাত, গোয়া-সহ বিভিন্ন রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক চলছিল আপ এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে৷ কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর দিল্লির সাতটি আসনের মধ্যে তিনটি এবং পঞ্জাবের ১৩টির মধ্যে পাঁচটি কংগ্রেসকে ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল৷ বিনিময়ে কেজরীর দল হরিয়ানায় ১০টি আসনের মধ্যে তিনটি, গোয়ার দু’টি আসনের মধ্যে একটি এবং গুজরাতে ২৬টি আসনের মধ্যে দু’টি (ভারুচ এবং অন্য একটি) চেয়েছিল৷ কিন্ত্ত সেই প্রস্তাবে সম্মত হয়নি কংগ্রেস৷
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে রাহুল গান্ধি বলেছিলেন, ‘আমাদের (কংগ্রেস-তৃণমূলের) যে আসন বোঝাপড়ার প্রক্রিয়া রয়েছে, তা চলছে৷ তার ফলাফল আসবে৷ ওই বিষয়ে আমি এখানে কোনও মন্তব্য করব না৷’’ এর পর প্রায় এক নিশ্বাসে রাহুল বলেছিলেন, ‘মমতাজির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ও দলের সম্পর্ক (রিস্তা) খুবই ভাল৷ হ্যাঁ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই রকম (বিতর্ক) হয়৷ আমাদের কেউ কিছু বলে দেন৷ ওঁদের কেউ কিছু বলেন৷ এটা অস্বাভাবিক নয়৷ কিন্ত্ত সে সব এতে (আসন বোঝাপড়ায়) বাধা হয়ে দাঁড়াবে না৷’’ এর পরেই বুধবার মমতা কার্যত বাংলায় জোটের সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়ে বলেন, ‘‘আমার কারও সঙ্গে কোনও কথা হয়নি৷ আমার প্রস্তাব প্রথম দিনেই প্রত্যাখ্যান করেছে! আমার সঙ্গে কারও কোনও আলোচনা হয়নি৷ অ্যাবসোলিউটলি মিথ্যা কথা!’