স্বামীর সঙ্গে সংসার না করলেও ক্ষেত্রবিশেষে ভরণপোষণ বাবদ খরচা পেতে পারেন স্ত্রী। এমনটাই জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে শীর্ষ আদালত এও জানিয়েছে সবক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। ভিন্ন ক্ষেত্রে পরিস্থিতির উপরে বিষয়টি নির্ভর করবে। সুপ্রিম কোর্টে ঝাড়খণ্ডের এক দম্পতির বৈবাহিক কলহ নিয়ে মামলা চলছিল। ২০১৪ সালের মে মাসে তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই আলাদা হয়ে যান তাঁরা। ২০১৫ সালের অগস্ট থেকেই বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন ওই মহিলা। স্বামীর দাবি, বহুবার অনুরোধ করার পরেও স্ত্রী বাড়ি ফেরেননি। এরপরে স্ত্রীকে ঘরে ফেরাতে প্রথমে রাঁচীর এক পারিবারিক আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন স্বামী।
তবে স্ত্রীর দাবি ছিল, শ্বশুর বাড়িতে তাঁকে মানসিক অত্যাচার করা হয়। ওই মহিলার দাবি ছিল তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে শৌচালয় ব্যবহার করতে দেওয়া হতো না। এমনকি স্টোভেও রান্না করতে দেওয়া হতো না। তাঁকে কাঠ-কয়লা দিয়ে রান্না করতে হত। এমনকি ৫ লক্ষ টাকা পণের জন্যও তাঁর ওপর চাপ তৈরি করা হচ্ছিল বলে দাবি ওই মহিলার। কারণ ওই পণের টাকা নিয়ে তাঁর স্বামী গাড়ি কিনতে চেয়েছিলেন। ওই মহিলার দাবি, এই সমস্ত অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে, বাপের বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এই কথা জানিয়ে তিনি স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণের জন্য টাকা চেয়ে নিম্ন আদালতে আবেদন জানান। পারিবারিক আদালত তাতে সম্মতি দেয়। স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় বিচারক।
একই সঙ্গে তাঁকে স্বামীর সঙ্গে ঘর করার জন্যও বলা হয়। এরপর পারিবারিক আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ঝাড়খন্ড হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন স্বামী। তাঁর দাবি ছিল, স্ত্রী একসঙ্গে সংসার করছেন না। এই অবস্থায় হাইকোর্ট জানিয়ে দেন ওই মহিলা ভরণপোষণের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পাবেন না। পরে মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছায়। শীর্ষ আদালত সম্প্রতি ওই মহিলার পক্ষেই রায় দিয়েছে। শৌচালয় এবং বাড়িতে থাকা অন্য সুবিধা যে মহিলাকে ব্যবহার করতে দেওয়া হত না -এই মামলার ক্ষেত্রে সেটির উপর গুরুত্ব দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মহিলাকে ১০ হাজার টাকা করে ভরণপোষণের খরচ দিতে হবে। যেদিন থেকে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে (২০১৯ সালের ৩ অগস্ট) সেদিন থেকেই এই ভরণপোষণের নির্দেশ কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।