তিরুঅনন্তপুরম, ২১ জুলাই – নিপা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হল ১৪ বছরের কিশোরের। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, ভেন্টিলেশনে থাকাকালীন ম্যাসিভ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় ওই কিশোরের। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিল মলপ্পুরমের বাসিন্দা ওই কিশোর। হাসপাতালে ভর্তি করার পর শনিবার নমুনা পরীক্ষায় কিশোরের শরীরে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণের খবর নিশ্চিত হয়। এরপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকদের বহু চেষ্টার পরেও বাঁচানো যায়নি ওই কিশোরকে।
রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বলেন, ‘ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয় ছেলেটিকে। এর পরেই তার ম্যাসিভ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার ফলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মেডিক্যাল প্রোটোকল মেনেই দেহের সৎকার করা হবে।’
কেরলের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সে রাজ্যে মোট চারজন নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সবাইকে ‘অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ বিভাগে রাখা হয়েছে। মঞ্জরী মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা চলছে তাদের।
এর আগেও চারবার কেরলে হানা দিয়েছিল এই মারণ নিপা ভাইরাস। ২০১৮, ২০২১ এবং ২০২৩ সালে কোঝিকোড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল নিপা। এছাড়াও এর্নাকুলামে নিপায় আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলে ২০১৯ সালে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে রাজ্যকে নিপা-মুক্ত বলে ঘোষণা করেন বীনা জর্জ। কিন্তু এবার মলপ্পুরম জেলার পান্দিক্কড় নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে।
এইমস, আইসিএমআর জানাচ্ছে, নিপা ভাইরাস আক্রান্ত হলে কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, আক্রমণ প্রতিরোধ করার মতো কোনও টিকাও আবিষ্কৃত হয়নি। ফলে মৃত্যুর হার বিশ্বে গড়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ।
সাধারণ পরীক্ষায় নিপার সংক্রমণ ধরা পড়ে না৷ থ্রোট সোয়াব, অর্থাৎ গলা থেকে তরল নিয়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করে সংক্রমণ ধরতে হয়। কোভিডের মতোই আরএনএ ভাইরাস শণাক্ত করার জন্য আরটি-পিসিআর পরীক্ষাই সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য। ক্ষেত্রবিশেষে আইজিজি ও আইজিএম অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করেও দেখা হয়।
নিপা থেকে বাঁচতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে বলছেন ডাক্তাররা। বাজার থেকে কিনে আসা মাংস ভাল করে ধুয়ে ভালোভাবে রান্না করে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। নাকে–মুখে হাত দেওয়ার আগে বা খাবার খাওয়ার আগে হাত ভাল করে ধুয়ে নেওয়া, আক্রান্ত রোগীর থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব রাখা জরুরি।