তফসিলি এক শিক্ষক চরম জাতপাতের শিকার মোদির রাজ্যে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Photo: IANS)

মোদির ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ মুখ থুবড়ে পড়েছে গুজরাটে। সেখানে ফতোয়া দেওয়া হয়েছে এক শিক্ষককে। এক ৫০ বছর বয়সি স্কুলশিক্ষক তফসিলি জাতিভুক্ত বাল্মিকী সম্প্রদায়ের। রাজ্যের সুরেন্দ্রনগর জেলার যে গ্রামের স্কুলে তিনি পড়ান, সেখানকার পঞ্চায়েতের সরকারি ভাবে গৃহীত সিদ্ধান্ত গ্রামে বাল্মিকীদের থাকার কোনও জায়গা নেই। তাই তিনি ওখানে কোনও বাড়ি পাবেন না। বাধ্য হয়ে রোজ ১৫০ কিমি সাইকেলে আসা যাওয়া করেন তিনি।

এহেন চরম ভেদাভেদের খবর কানে যাওয়া মাত্র রাজ্যের ন্যায় ও ক্ষমতায়ন দপ্তর গত সপ্তাহে চিঠি পাঠিয়ে শিক্ষা দপ্তরের কাছে স্বীকার করেছে, তফসিলি জাতিভুক্ত বলেই ওই শিক্ষককে নির্যাতন, বৈষম্য, অসাম্য ও জাতপাতের শিকার হতে হয়েছে। সমাজকল্যাণ দপ্তরের নির্দেশ, যত শীঘ্র সম্ভব তাঁকে বদলি করুক শিক্ষা দপ্তর।

কানহাইয়ালাল বারাইয়া নামে শিক্ষক থাকেন সুরেন্দ্রনগরের চুড়া তালুকের ছতরিওয়ালা গ্রামে তাঁকে বদলি করা হয় ওখান থেকে ৭৫ কিমি দুরে জেলারই নিনামা গ্রামের স্কুলে। বারাইয়া জানিয়েছেন, তিনি স্কুলে রিপোর্ট করে ভাড়াবাড়ির খোঁজ করেন। কোন জাতের লোক, জানতে চাওয়া হয় আমার কাছে।


বাল্মিকী সম্প্রদায় বলা মাত্রই জানিয়ে দেওয়া হয়, গ্রামে কোনও বাল্মিকী ঘর নেই, তাই কোনও বাড়ি ভাড়া পাব না আমি! গ্রামের তালাতি ও সরপঞ্চ অর্থাৎ নির্বাচিত প্রশাসকরা তাঁকে পঞ্চায়েতের সরকারি লেটারহেডে এটা জানিয়ে দেন।

সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দপ্তরে অভিযোগ করার পাশাপাশি তিনি মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলকেও সব জানিয়ে এর বিহিত চান, তাঁকে বদলির আবেদন করেন। মুখ্যমন্ত্রী নাকি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

রাজ্যের দলিত অধিকার আন্দোলন কর্মীদের দাবি, এমন বৈষম্য এখানে স্বাভাবিক ব্যাপার। এখন শিক্ষকরাও বাদ যাচ্ছেন না, এটা চরম দুর্ভাগ্যজনক।

কাস্তিলাল পারমার নামে জনৈক দলিত অধিকারকর্মী জানাচ্ছেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বলেছি, ২০২২-এর ২৬ জানুয়ারির মধ্যে দেশে এমন কোনও গ্রামের নাম ঘোষণা করুন, যেখানে জাতপাতের বৈষম্য নেই। গুজরাতের সর্বত্র প্রতিদিন এমন হয়।