দেশের কয়েকটি রাজ্যে cপরিস্থিতি আরও ভয়ানক হচ্ছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে রাজ্যগুলিতে তৈরি হয়েছে এই পরিস্থিতি। সব থেকে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রে। মুম্বই, রত্নগিরি, কল্যাণ সহ জলস্তর বাড়ছে বেশ কয়েকটি শহরে।
প্রবল বৃষ্টির জেরে থানের বদলাপুর স্টেশনের কাছে ভেসে গেছে রেল লাইন। রাত থেকে আটকে মুম্বই থেকে কোলহাপুরগামী মহালক্ষ্মী এক্সপ্রেস। ট্রেনের মধ্যে কোনও প্যান্ট্রি কার নেই। খাবার জন্য হাহাকার চলছে। বহু শিশু ও সন্তানসম্ভবা মহিলারা আটকে রয়েছেন ট্রেনের মধ্যে।
ট্রেনের মধ্যে আটকে রয়েছেন প্রায় ৭০০ জন যাত্রী। জলবন্দি ট্রেন থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করতে বায়ুসেনা, নৌসেনার হেলিকপ্টার ও জাতীয় বিপর্যয় মােকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-কে কাজে লাগান হয়েছে।
এক টানা বৃষ্টি ও রেল লাইনের ওপর জমা জলের কারণে ট্রেনের ভিতর থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা। ট্রেনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে আরপিএফ ও স্থানীয় পুলিশ বাহিনী। এনডিআরএফ কর্মীরাও ট্রেনের কাছে পৌঁছে গেছেন বলে জানা গেছে। উদ্ধার কাজে নামানাে হয়েছে নৌবাহিনীকেও। নৌসেনার একটি দল উদ্ধার কাজে নেমেছে।
মুম্বই শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলােমিটার দূরে আটকে রয়েছে মহালক্ষ্মী এক্সপ্রেস। ট্রেনের দরজার পর্যন্ত পৌঁছে গেছে লাইনের ওপর জমা জল। বদলাপুর-ওয়ানগানির মাঝে যেখানে ট্রেনটি আটকে রয়েছে সেখান থেকে জনবসতি বেশ খানিকটা দূরে। যাত্রীরা ট্রেন থেকে নামতে সাহস পাচ্ছেন না।
আটক ট্রেন যাত্রীদের মধ্যে বিস্কুট ও পানীয় জল বিতরণ করছে পুলিশ। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ট্রেন থেকে নামতে বারণ করা হয়েছে মধ্য রেলওয়ের তরফ থেকে। যাত্রীদের উদ্দেশ্যে ঘােষণা করা হচ্ছে ট্রেনের ভিতর থাকাটাই তাদের কাছে নিরাপদ। নীচে নামতে বারণ করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধার করার জন্য ট্রেনটিকে ঘিরে রেখেছে পুলিশ, আরপিএফ ও এনডিআরএফ কর্মীরা।
যাত্রীদের ভয় না পাওয়ার জন্য বারবার আবেদন করা হচ্ছে মধ্য রেলের তরফ থেকে। রাতভর বৃষ্টিতে শহরের বহু এলাকা জলের তলায়। ট্রেন ও বিমান চলাচল পুরােপুরি স্তব্ধ। দৃশ্যমানতার অভাবে শনিবার সকালে মুম্বই বিমানবন্দর থেকে ১১টি যাত্রীবাহী উড়ান বাতিল করা হয়েছে। রেলের তরফ থেকে ট্রেন চলাচলের বিষয়ে ক্রমাগত টুইট করে পরিস্থিতি সম্পর্কে খবর দেওয়া হচ্ছে।
মধ্য রেলের টুইটে জানান হয়েছে, পরিষেবা সমস্ত দিকেই রয়েছে, শুধুমাত্র কল্যাণ, করজত ও খােপলি ছাড়া। প্রবল বৃষ্টির কারণে উলহাস নদী প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় অম্বরনাথ, বদলাপুর ও ভাঙ্গানি জলমগ্ন রয়েছে।
মুম্বইতে জলমগ্ন এলাকাগুলিতে তল্লাশি ও উদ্ধারকাজের জন্য জাতীয় বিপর্যয় মােকাবিল বাহিনীর আরও ৪টি দলকে মােতায়েন করা হয়েছে। বাণিজ্য নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। সিওন ও চেম্বুরে জনজীবন প্রায় স্তব্ধ।
আবহাওয়া দফতরের রিপাের্ট অনুযায়ী আগামী ৩ দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে থানে, পালঘর ও মুম্বইয়ের বহু অঞ্চলে। বন্যার কবলে পড়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে বিহার ও অসমে। দুই রাজ্যেই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা রাজস্থানে চিত্রটা আরও করুণ।
সিকারে বৃষ্টির জলে নালাগুলি নদীর মতাে দেখাচ্ছে। বরসানী জেলায় স্কুলে যাওয়ার সময় নালায় পড়ে ভেসে যায় কয়েকজন শিশু। জলের তােড়ে তাদের ভেসে যেতে দেখে স্থানীয় যুবকরা ঝাপিয়ে পড়ে কোনওক্রমে উদ্ধার করে শিশুগুলিকে।