ভোটারদের পরিচয় যাচাই নিয়ে বিতর্ক ছিলই। বুধবারই যোগী রাজ্যে সুষ্ঠু উপ-নির্বাচন নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সমাজবাদী পার্টির অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচনী নির্দেশিকা লঙ্ঘন করার অভিযোগে সাতজন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হল।
উত্তরপ্রদেশে উপ-নির্বাচন হয় ৯ টি বিধানসভা আসনে। বুধবার কাটহারি, কারহাল, মিরাপুর, গাজিয়াবাদ, মাঝাওয়ান, সিসামাউ, খয়ের, ফুলপুর এবং কুন্দারকিতে উপনির্বাচন। সমাজবাদী পার্টির দাবি, বেশ কিছু ভোটকেন্দ্রে পুলিশ শাসক দলকে সুবিধা দিতে ভোটাদাতাদের ভোটদানে বাধা দেয়।মিরাপুরে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরে উভয় যুযুধান দুই পক্ষের মধ্যে পাথর বৃষ্টি হয় বলে খবর মিলেছে।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং সমস্ত জেলা নির্বাচন অফিসার এবং রিটার্নিং অফিসারদের সুষ্ঠু ও মসৃণ ভোট প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের অভিযোগ, পুলিশ আধিকারিকরা ভোটার কার্ড এবং আধার পরিচয়পত্রগুলি যাচাই বেআইনিভাবে করছিলেন। আরও অভিযোগ, কিছু সম্প্রদায়কে ভোট দেওয়া থেকে বাধা দেওয়া হয়। অখিলেশ যাদব বলেন ,’আমরা একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছি। মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। এত অভিযোগ সত্ত্বেও কমিশন এসব দেখতে বা শুনতে পাচ্ছে না। বিজেপি এই উপনির্বাচনে ভোট দিয়ে নয়, ‘খোট’ দিয়ে জিততে চায়। বিজেপি প্রশাসনকে নোংরা খেলায় লিপ্ত হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।’
এরপরই নির্বাচনী নির্দেশিকা অমান্য করায় সাসপেন্ড করা হয় ৭ জন পুলিশকর্মীকে। এক বিবৃতিতে কমিশন জানায়, ‘কোনও যোগ্য ভোটারকে ভোট দিতে বাধা দেওয়া যাবে না। ভোটের সময় কোনও ধরনের পক্ষপাতমূলক মনোভাব বরদাস্ত করা হবে না। অভিযোগ পেলে তৎক্ষণাৎ তদন্ত করা হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বুধবার চার রাজ্যে উপনির্বাচন হয়। উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, কেরল এবং উত্তরখণ্ডে। যোগীরাজ্য ছাড়াও বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর মেলে পাঞ্জাবে। এছাড়া মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ছিল চার রাজ্যের ১৫ টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন। সকাল থেকেই বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে উৎসাহী মানুষের ভিড় চোখে পড়ে।
লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে ধাক্কা দিয়েছিল বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। উপ-নির্বাচনে ফের মুখোমুখি বিজেপি ও ইন্ডিয়া। জোটধর্ম রক্ষা করে উপ-নির্বাচনে ৯টি আসনের একটিতেও প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস। প্রতিটি আসনেই লড়াই করেছে অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি। কংগ্রেস তাদের সমর্থন করেছে। অন্যদিকে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি প্রতিটি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। মিম লড়াই করছে ৩টি আসনে। তবে ৪০৩ আসন বিশিষ্ট উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় বিজেপির দখলে রয়েছে ২৫১টি আসন।
এছাড়াও উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ আসনে বুধবার নির্বাচন হয়। এই আসনে বিজেপি ও কংগ্রেসের সরাসরি লড়াই। বিজেপির সামনে কেদারনাথ আসনটি ধরে রাখাই এবার চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে বদ্রীনাথের পর কেদারনাথের বিজেপিকে ধাক্কা দিতে চাইছে কংগ্রেস।
বুধবার পাঞ্জাবেও ৪টি আসনে নির্বাচন হয়। চারটি আসনে লড়াই করছেন মোট ৪৫ জন প্রার্থী। পাঞ্জাবে কংগ্রেস ও আপের মুখোমুখি লড়াই। চারটি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের দখলে ছিল ৩টি, ১টি ছিল আপের দখলে।
কেরলের পালাক্কারেও এদিন নির্বাচন হয়। এই আসনের কংগ্রেস বিধায়ক লোকসভায় নির্বাচিত হওয়ায় উপ-নির্বাচন হল। উপনির্বাচনে ভোট কেন্দ্রগুলিতে সকাল থেকে ছিল উৎসাহী মানুষের ভিড়।