২০২৪-এ জম্মু-কাশ্মীরে নিহত জঙ্গিদের ৬০ শতাংশই পাকিস্তানি, জানালেন সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী

জম্মু- কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ এবং সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান। তাঁর দাবি, ২০২৪-এ জম্মু-কাশ্মীরে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে ৬০ শতাংশই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। তিনি আরও বলেন,  জম্মু ও কাশ্মীরে আত্মগোপন করে থাকা জঙ্গিদের ৮০ শতাংশই পাকিস্তানি। তিনি আরও জানান, কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

পাকিস্তান ও চিন সীমান্তে বহু সেনা অভিযানের অভিজ্ঞতা রয়েছে সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদীর। কাশ্মীর উপত্যকা এবং নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অঞ্চলে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি বহাল রয়েছে। তবে সীমান্তের ওপারে সন্ত্রাসবাদী কাজে মদত দেওয়ার কাজ চলছেই।’

দ্বিবেদী জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা চলেই যাচ্ছে। এর পাশাপাশি যুদ্ধের জন্য অস্ত্রশস্ত্র পাচার এবং মজুত করতে ড্রোন ব্যবহারের চেষ্টাও চলছে। কখনও আবার ড্রোনের মাধ্যমে মাদক পাচারের চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে উত্তর কাশ্মীর এবং ডোডা-কিস্তওয়ার অঞ্চলের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেন তিনি। সেনাপ্রধানের কথায়, গত কয়েক মাসে এই অঞ্চলগুলিতে জঙ্গি কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।


উপত্যকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে সেনাপ্রধান অমরনাথ যাত্রার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেছেন, ‘এবার অমরনাথ যাত্রা করেছেন প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি তীর্থযাত্রী। লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর মানেই সন্ত্রাসবাদ এই ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে , উপত্যকায় পর্যটনও ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।’ সামগ্রিক ভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বলে জানান তিনি।

ভারত-চিন সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকার কথা বলতে গিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সামগ্রিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও তা স্পর্শকাতর অবস্থায় রয়েছে। পূর্ব লাদাখের দেপসাং এবং ডেমচকের ঐতিহ্যবাহী এলাকায় সেনা টহল এবং পশুপালন শুরু হয়েছে।’

সোমবারই কাশ্মীরের সোনমার্গে জেড-মোড় টানেলের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই টানেল সব ঋতুতে কাশ্মীর ও লাদাখের মধ্যে যোগাযোগের পথ খুলে দেবে। ফলে একদিকে যেমন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত হবে. তেমন আর্থিক বৃদ্ধিরও সহায়ক হবে এই পথ। সেনাপ্রধান বলেন, সীমান্ত সুরক্ষার ক্ষেত্রে পরিকাঠামো বৃদ্ধি এবং উন্নয়নের উপর জোর দিচ্ছে সেনাবাহিনী।