স্কুলের উন্নতির জন্য তন্ত্রসাধনা, এবং তার জেরে বলি দেওয়া হল স্কুলেরই দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রকে। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে স্কুলের মালিক তথা ডিরেক্টর ছাড়াও ডিরেক্টরের বাবা, এবং আরও তিন শিক্ষককে। ভয়াবহ এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের হাথরসে। জানা গেছে, স্কুলের ডিরেক্টর বিশ্বাস করতেন কালাজাদু, তন্ত্র মন্ত্রের মতো শক্তিতে। তাই স্কুলের উন্নতিকল্পে কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে বলি দেওয়া হয় ওই নাবালক ছাত্রকে।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে উত্তরপ্রদেশের রাসগাও এলাকার ডিএল পাবলিক স্কুলের ডিরেক্টর, তাঁর বাবা, এবং আরও তিন শিক্ষক ওই স্কুলের উন্নতির জন্য নরবলির পরিকল্পনা করেন। স্কুলের ছাত্রাবাসে ২২ শে সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় শ্রেণীর ওই ছাত্রকে তিনজন মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর জানা যায় স্কুলের ডিরেক্টরের বাবা গোপনে তন্ত্রসাধনা চর্চা করতেন। জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে এই স্কুলটি লোকসানে চলছিল। ফলে স্কুলের উন্নতিসাধন নরবলির পরিকল্পনা করা হয়। তাঁদের মনে এই বিশ্বাস গড়ে ওঠে যে একটি শিশুকে ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গ করা হলে স্কুলের নাম-যশ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।
ছেলেকে হত্যার অভিযোগ করে এফআইআর দায়ের করেন মৃত শিশুর বাবা কৃষ্ণ কুশওয়ালা । তিনি জানান, তাঁকে স্কুলে কর্তৃপক্ষ সোমবার ফোন করে জানায় ছেলে অসুস্থ , তাকে হাসপাতানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি স্কুলে পৌঁছলে তাঁকে বলা হয়, ডিরেক্টর তাঁর ছেলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় তাঁকে সাদাবাদের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর তাঁরা আগ্রার দিকে রওনা হলে পথে স্কুল ডিরেক্টরের গাড়ি দেখতে পান। কিন্তু তাঁরা কৃষ্ণ কুশওয়ালকে দেখেও গাড়ি থামাননি। এরপর ওই গাড়ি থেকেই ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ তদন্তে নেমে স্কুলের চত্বর থেকে কালাজাদু এবং বলি দেওয়ার নানা উপকরণ পায়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয়। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হাথরসের পুলিশ সুপার নিপুণ আগরওয়াল জানিয়েছেন , ‘এই কাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ার দিকে স্কুলের হোস্টেল থেকে একটি শিশুকে তুলে এনে বলি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শিশুটি বুঝতে পারায় সে হোস্টেল রুমের অ্যালার্ম বাজিয়ে দেয়, ফলে বানচাল হয়ে যায় নরবলির পরিকল্পনা।