৪৮ বছরের সম্পর্কে ছেদ, কংগ্রেস ছাড়লেন বাবা সিদ্দিকী

মুম্বাই, ৮ ফেব্রুয়ারি – কংগ্রেস ছাড়লেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকী। হাত শিবিরের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ ৪৮ বছরের সম্পর্কে ছেদ পড়ল। মহারাষ্ট্রে দলের প্রবীণ নেতা সিদ্দিকীর দলত্যাগ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা। কংগ্রেস ছেড়ে অজিত পাওয়ারের এনসিপি-তে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বৃহস্পতিবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেন প্রবীণ নেতা সিদ্দিকী। তিনি লেখেন, “কিশোর বয়সে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলাম। সেই সম্পর্ক বজায় ছিল ৪৮ বছর। আজ আমি দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। এখন থেকেই তা কার্যকর হবে।” তিনি আর লিখেছেন, “আমি অনেক কথাই বলতে চাই। কিন্তু কিছু কথা না-বলাই ভাল। এই যাত্রাপথে আমার সঙ্গী হওয়া সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”

 
কলেজ জীবনে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন সিদ্দিকী। ১৯৯৯, ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে বিধায়ক নির্বাচিত হন। মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। এর পাশাপাশি মুম্বই পুরনিগমের একাধিক পদে ছিলেন তিনি। এছাড়াও মুম্বই রিজিওনাল কংগ্রেস কমিটির চেয়ারপার্সন এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন সিদ্দিকী। মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিরও সদস্য ছিলেন তিনি। মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রীও হয়েছেন। ৪৮ বছর ধরে  কংগ্রেসে থাকা এই নেতার এমন সিদ্ধান্তে মুষড়ে পড়েছে মহারাষ্ট্র কংগ্রেস। দল ছাড়ার কারণ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন এই নেতা। বলেছেন, ‘দলে অনেক কথা বলতে চেয়েছি। সুযোগ মেলেনি। তাই এই সিদ্ধান্ত।’ তবে কোনও নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ তাঁর মুখে শোনা যায়নি।

কংগ্রেস ছাড়ার পর কী করবেন, সেই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গেলেও রাজনৈতিক মহলের খবর সিদ্দিকী একনাথ শিন্ডের শিবসেনায় নাম লেখাতে পারেন। মিলিন্দও যোগ দিয়েছেন শিন্ডের দলেই। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন তিনি। ভারতীয় নির্বাচন কমিশন অজিত পাওয়ারের শিবিরকেই আসল এনসিপি বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতি মেলার পর পরই কংগ্রেস ছাড়লেন সিদ্দিকী।ফলে অজিত পাওয়ারের দলে যোগ দেওয়ার জল্পনা ছড়িয়েছে। এদিকে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বাবা সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠতাও দলে গোপন ছিল না। নির্বাচন কমিশন অজিত পাওয়ারের গোষ্ঠীকে প্রকৃত এনসিপি ঘোষণা করায় প্রবল চাপে পড়েছেন শরদ পাওয়ার। সিদ্দিকীকে দলে টেনে তিনি পার্টির ভোট ব্যাঙ্ক শক্ত করতে চাইছেন, এমন জল্পনাও রয়েছে।

বিজেপিতে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহলের একাংশ। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসাতে বিজেপি সিদ্দিকীকে দলে টানার চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন অনেকে। 


প্রাক্তন মন্ত্রী সিদ্দিকীর সখ্যালঘুদের উপর প্রভাব বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে। রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রায়ও  সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পর পর দুজন হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতার দলত্যাগে লোকসভা ভোটের আগে মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের চিন্তা বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।