মধ্যপ্রদেশের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার মালিক-সহ ৩ জন

 ভোপাল, ৭ ফেব্রুয়ারি – মধ্যপ্রদেশের বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় কারখানার মালিক-সহ গ্রেফতার হল তিন জন। গ্রেফতার করা হয়েছে সোমেশ আগরওয়াল, রফিক খান এবং রাজেশ আগরওয়ালকে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজেশ আগরওয়াল ওই কারখানার মালিক। তাঁর  বিরুদ্ধে অভিযোগ, কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর গাড়ি করে দিল্লির উদ্দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রাজেশ। বিস্ফোরণের ঘটনায় সোমেশ এবং রফিকের রাজেশের সঙ্গে যোগসূত্র থাকতে পারে এমনটাই মনে করছে পুলিশ। অভিযুক্ত তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে ভোপাল থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে হরদা শহরের বৈরাগড় এলাকার একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। আচমকা বিস্ফোরণের ফলে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানার আশপাশের বাড়িগুলিতে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দমকল কর্মীদের পাশাপাশি সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ১৭৪ জনকে উদ্ধার করা হয়। পিটিআই সূত্রে খবর, তাঁদের মধ্যে ৩৪ জনকে ভোপাল এবং হোসাঙ্গাবাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাকি ১৪০ জন আহতকে ভর্তি করানো হয় জেলা হাসপাতালে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত কারখানায় বিস্ফোরণের ফলে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
 
ভোপালের বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ওই এলাকা। খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে পুলিশ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ  চালায় রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, সেই সময় বহু শ্রমিক কারখানার ভিতরে ছিলেন। বিস্ফোরণের ফলে আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে, শ্রমিকেরা ভিতরেই আটকে পড়েন। বিস্ফোরণের পর পরই কারখানা সংলগ্ন ৬০টি বাড়িতে আগুন ধরে যায়। সেই বাড়িগুলি থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হয় বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। একশোটি বাড়ি দ্রুত খালি করে দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১০-১৫টি পর পর জোরালো বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণের আওয়াজ কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা গিয়েছে। আকাশে আগুনের হলকা এবং ধোঁয়া দেখা যায় বহু দূর থেকে। আতঙ্কে ওই এলাকা ছেড়ে পালাতে শুরু করেন লোকজন।

পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, মৃতদের মধ্যে কয়েক জনের হাত-পা উড়ে গিয়ে আধ কিলোমিটার দূরে পড়ে। কয়েক জনের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।  বিস্ফোরণের জেরে কয়েক জন পথচারীও জখম হন বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ৪০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত মাটি কেঁপে ওঠে। কীভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।