রাজস্থানের রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান থেকে নিখোঁজ ২৫টি বাঘ। একসঙ্গে এতগুলো বাঘ নিখোঁজের ঘটনায় আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে বন দপ্তরে। এই ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাঘ নিখোঁজের বিষয়টি স্বীকার করে নেন প্রধান বন্যপ্রাণী ওয়ার্ডেন পবন কুমার উপাধ্যায়।
রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানে রয়েছে ৭৫টি বাঘ এবং বাঘিনী। বন দপ্তরের এক সূত্রের দাবি, গত এক বছরে ৭৫টির মধ্যে ২৫টি বাঘ নিখোঁজ। এর মধ্যে ১১টি বাঘের গতিবিধির উপর নজর রাখা সম্ভব হয়নি। বাকি ১৪টি বাঘ কীভাবে উধাও হয়ে গেল সে সম্পর্কে অন্ধকারে বনদপ্তরও। এই বিষয়ে বনদপ্তরের কাছে কোনও খবরই ছিল না বলে বিশেষ সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাঘের উপর নজরদারির একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। গত ১৪ অক্টোবর প্রকাশিত সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ১১টি বাঘ কোথায় রয়েছে সে সম্পর্কে কোনও প্রমাণ বা হদিশ মেলেনি। এছাড়া বাকি ১৪টি বাঘের অস্তিত্ব সম্পর্কেও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। রাজস্থানের মুখ্য বনসংরক্ষক পবনকুমার উপাধ্যায় এই ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। সেই কমিটি ২ মাসের মধ্যে বাঘ নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করবে।
রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানে হারিয়ে যাওয়া বাঘের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এক সংবাদ সংস্থাকে রাজস্থানের মুখ্য বন সংরক্ষক পবন কুমার উপাধ্যায় বলেন, ‘আমি যখন চিফ ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন হয়েছি, তখন আমরা টাইগার মনিটরিং রিপোর্ট পড়তে শুরু করি। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে আমরা এই বিষয়ে প্রথম চিঠি লিখেছিলাম। আমরা সাড়া পেয়েছি, কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। এরপরে আমরা সাপ্তাহিক বাঘ নজরদারির জন্য তদ্বির শুরু করি। ১৪ই অক্টোবরের রিপোর্ট অনুযায়ী, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ১১টি বাঘ নিখোঁজ রয়েছে। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে আরও ১৪টি বাঘ নিখোঁজ হয়েছে। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান থেকে বাঘ নিখোঁজ হওয়ার পর মুখ্য বনসংরক্ষক, বন সংরক্ষক এবং ডেপুটি বনসংরক্ষককে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এক বছরের মধ্যে কী ভাবে এতগুলি বাঘ নিখোঁজ হয়ে গেল, এর কারণ কী, বাঘের গতিবিধি বনদপ্তরের নজরদারির আওতায় ছিল কি না— এ সব নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ওই কমিটি। এই ঘটনায় কোনও আধিকারিক বা কর্মীর গাফিলতি ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।