দিল্লি, ১২ জুলাই– যে সমস্ত বিষয় নিয়ে কংগ্রেসকে পদে পদে খোঁচা দিতে দেখা যায় মোদি সরকারকে তার মধ্যে অন্যতম হল দেশজুড়ে জরুরী অবস্থার ঘোষণা৷ ১৯৭৫ এর ২৫ জুন দেশজুড়ে জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি৷ আর সেই সেই কালো দিনটিকেই যাতে জনমানসেও ঘায়ের মতো করে জিয়ে রাখা যায় তারজন্য এবার নয়া ঘোষণা করল মোদি সরকার৷ শুক্রবার কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হল, ২৫ জুন দিনটিকে পালন করা সংবিধান হত্যা দিবস উপলক্ষে৷ শুক্রবার এক্স হ্যান্ডেলে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷
এই প্রসঙ্গে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে অমিত শাহ লেখেন, ‘১৯৭৫ সালের ২৫ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁর স্বৈরাচারী মানসিকতায় দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন৷ এবং ভারতীয় গণতন্ত্রের আত্মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন৷ লক্ষ লক্ষ মানুষকে বিনা কারণে কারাগারে ঢোকানো হয় এবং সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হয়৷ ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতি বছর ওই কালো দিন ২৫ জুনকে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে৷ বিশেষ এই দিনে সেই সব মানুষের অবদানকে স্মরণ করা হবে যারা ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার কারণে অমানবিক যন্ত্রণা সহ্য করেছিলেন৷’
একইসঙ্গে অমিত শাহ লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হল সেই লক্ষ লক্ষ মানুষের লড়াইকে সম্মান করা, যারা স্বৈরাচারী সরকারের অবর্ণনীয় নির্যাতন সত্ত্বেও গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই করে গিয়েছেন৷ ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে এবং প্রতিটি ভারতীয়ের মধ্যে ব্যক্তি স্বাধীনতার অমর জ্যোতিকে বাঁচিয়ে রাখতে কাজ করবে৷ যাতে ভবিষ্যতে কংগ্রেসের মতো কোনও একনায়কতান্ত্রিক মানসিকতা এর পুনরাবৃত্তি করতে না পারে৷’
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রতি বছর ২৫ জুন ‘জরুরি অবস্থা’র অতীত স্মরণ করে সরব হতে দেখা গিয়েছে মোদি-শাহদের৷ এমনকী সংসদের অন্দরেও এই ইসু্যতে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি৷ সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে সংবিধান রক্ষার লক্ষ্যে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান হাতে সরব হতে দেখা গিয়েছে রাহুল, খাড়গেদের৷ ঠিক সেই সময় ‘সংবিধান হত্যা দিবস’-এর ঘোষণা আসলে কংগ্রেস চাপে রাখার চেষ্টা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷