• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

সিকিমে আটকে ১৫০০ পর্যটক, খাদ্যসামগ্রী মজুত কয়েকদিনের 

গ্যাংটক, ১৪ জুন –  অবিরাম বৃষ্টি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে নতুন করে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল উত্তর ও দক্ষিণ সিকিমে। ধসের কারণে সিকিমে আটকে পড়েছেন অন্ততপক্ষে দেড়হাজার পর্যটক। তাঁদের উদ্ধারের জন্য সেনার কাছে এয়ারলিফটের আবেদন জানিয়েছে সিকিম সরকার। যদিও আবহাওয়া বিরূপ হওয়ায় এয়ারলিফটও সম্ভব নয়। টান পড়ছে খাদ্যসামগ্রীতেও। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের মুখোমখি দাঁড়িয়ে চিন্তিত প্রশাসন। শুক্রবার সকালে

গ্যাংটক, ১৪ জুন –  অবিরাম বৃষ্টি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে নতুন করে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল উত্তর ও দক্ষিণ সিকিমে। ধসের কারণে সিকিমে আটকে পড়েছেন অন্ততপক্ষে দেড়হাজার পর্যটক। তাঁদের উদ্ধারের জন্য সেনার কাছে এয়ারলিফটের আবেদন জানিয়েছে সিকিম সরকার। যদিও আবহাওয়া বিরূপ হওয়ায় এয়ারলিফটও সম্ভব নয়। টান পড়ছে খাদ্যসামগ্রীতেও। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের মুখোমখি দাঁড়িয়ে চিন্তিত প্রশাসন।

শুক্রবার সকালে টুং, দক্ষিণ সিকিমের লিংসে, লিঙ্গে , এবং পাইয়ংয়ের রাস্তায় ধস নামে। বৃহস্পতিবার রাতে নতুন করে ধস নামে কাওখোলা এবং সুন্তালে এলাকায়। ফলে সিংথামের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে ঐসব এলাকায়। লাচেন -সহ অন্যান্য এলাকায় আটকে থাকা পর্যটকদের টুং চেকপোস্ট পর্যন্ত নামিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।  এরপর তাঁদের আর নামানো সম্ভব হয়নি। পর্যটকদের সেখান থেকে গ্যাংটক ফেরাতে হলে এয়ারলিফট ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। রাস্তা রীতিমতো বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। বিভিন্ন ঝোরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাস্তায়। বালি ও পাথর গড়িয়ে পড়ছে একনাগাড়ে। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প কোন পথে পর্যটকদের উদ্ধার করা যায় , তা নিয়ে বৈঠক করছে সিকিম প্রশাসন।

 
পর্যটকরা যেখানে রয়েছেন সেইসব হোটেলেই থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারছে না বিপর্যয় মোকাবিলা দল। শুভলয়ে ভূমিধসের জন্য কাম্বলে এলাকায় ডিকচু রোড অবরুদ্ধ। সঙ্কলং-এ নবনির্মিত বেইলি ব্রিজ ভেসে যাওয়ায় মঙ্গন, জংগু এবং চুংথাং-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। গুরুদংমার লেক এবং ইয়ংথাং উপত্যকার মতো জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। গৃহহীনদের জন্য পাকশেপে একটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।
 
এদিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে এনএইচ ১০। বেহাল অবস্থার কথা বিবেচনা করে কালিম্পংয়ে জেলাশাসক শ্রী বালাসুহ্মনিয়ম এই পথে আপাতত যানচলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। বাসিন্দা ও পর্যটকদের সুরক্ষার কথা মাথা রেখে ও ভাঙাচোরা  রাস্তা মেরামতির জন্য জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত রবিঝোরা, তিস্তাবাজার, পেশক হয়ে দার্জিলিং যাওয়ার ও একই পথ ধরে বিপীরাতে আসার রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে।
 
শুক্রবার সকালে কালিমপংয়ের তিস্তাবাজার, মাল্লির ছবিও ছিল ভয়াবহ। প্রতিটি বাড়ির অন্দরে প্রবেশ করেছে নদীর জল। কোথাও কোথাও বাড়ির ভিতর পলির স্তর। কালিম্পঙ , দার্জিলিংয়ের রাস্তা বন্ধ। ঘুরপথে মংপু, সিটং, তাকদা হয়ে ছোট গাড়ি চলাচল করছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলিতে মোতায়েন থাকবেন পুলিশকর্মীরা। রুট সংক্রান্ত কোনও প্রকার পরামর্শ প্রয়োজন হলে তাঁরা সাহায্য করবেন। রুট পরিবর্তন সংক্রান্ত নয়া এই নির্দেশিকা বাস্তবায়নে প্রচারে জোর দিয়েছে সিকিম প্রশাসন। 
 
ভারতীয় সেনার তরফে কর্নেল অঞ্জন কুমার বসুমাতারি বলেন, ‘বিভিন্ন হোটেলগুলিতে যেসব পর্যটক রয়েছেন তাঁদের আগামী কিছুদিনের খাদ্যসামগ্রী মজুত রয়েছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এয়ারলিফট ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।’    
 
সিকিম প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে সেখানে আটকে রয়েছেন ১২০০ ভারতীয় এবং ১৫ জন বিদেশী পর্যটক।