দিল্লি, ৫ জানুয়ারি – আফ্রিকার সোমালিয়ার উপকূলের কাছ থেকে অপহরণ করা হল ১৫ জন ভারতীয় নাবিককে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই পণ্যবাহী জাহাজটিকে অপহরণ করা হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় নৌসেনা। জাহাজটির নাম ‘এমভি লিলা নরফোক’। উল্লেখ্য, দুমাসেরও বেশি সময় ধরে লোহিত সাগরে হামলা চালচ্ছে ইয়েমেনের হাউথি জঙ্গিরা।
ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ, আইএনএস চেন্নাই-কে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অপহৃত জাহাজটিকে পর্যবেক্ষণের জন্য নজরদারি এয়ারক্র্যাফ্টও মোতায়েন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, জাহাজের ক্রু সদস্যদের সঙ্গেও ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করা গিয়েছে। তবে, কারা এই অপহরণ কাণ্ডের পিছনে রয়েছে, তা এখনও নৌসেনার তরফে জানানো হয়নি। নৌসেনা জানিয়েছে, তারা এই অপহরণকাণ্ডের উপর কড়া নজর রাখছে।
গত কয়েক সপ্তাহে একাধিকবার হামলার মুখে পড়েছে ভারতীয় জাহাজগুলো। লোহিত সাগরে হাউথিদের দাপটের জেরে নড়েচড়ে বসেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। আরব সাগরের বিশাল অংশে নজরদারি বাড়ায় ভারতীয় নৌসেনা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, পণ্যবাহী জাহাজের নিরাপত্তা বজায় রাখা নৌসেনার অন্যতম প্রধান কর্তব্য। আরব সাগরে নজরদারি বাড়ানোর মাত্র পাঁচদিনের মধ্যেই সোমালিয়ায় বিপর্যয়ের মুখে ভারতীয় জাহাজকর্মীরা।
নৌবাহিনী জানিয়েছে, এদিন ভোর থেকেই তাদের একটি পি৮আই সামুদ্রিক টহলদারি বিমান, অপহৃত জাহাজটির উপরে চক্কর কাটা শুরু করেছে। জাহাজটির উপর লাগাতার নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে বিমানটি। ওই এলাকার অন্যান্য দেশের নিরাপত্তা সংস্থা এবং বহুদেশীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নৌবাহিনী বলেছে, “আন্তর্জাতিক শক্তি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ বিদেশী শক্তিগুলির সঙ্গে, এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারতীয় নৌবাহিনী।”
লোহিত সাগর, এডেন উপসাগর এবং মধ্য ও উত্তর আরব সাগর বরাবর যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক চ্যানেল রয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে হামলা বেড়েছে। এই এলাকায় একের পর এক বাণিজ্যিক জাহাজ হামলার মুখে পড়েছে। গত মাসে, আরব সাগরের কাছে লাইবেরিয়ার পতাকা নিয়ে চলা এক ট্যাঙ্কার জাহাজ, এমভি কেম প্লুটো-তে ড্রোন হামলা হয়েছিল। সেই জাহাজটিতেও ২১ জন ভারতীয় ছিলেন ক্রু সদস্য হিসেবে। এমভি কেম প্লুটো ছাড়াও, ভারতের উদ্দেশে রওনা হওয়া আরও একটি বাণিজ্যিক তেল ট্যাঙ্কারের উপরও একই দিনে দক্ষিণ লোহিত সাগরে ড্রোন হামলা হয়েছিল। গাজায় ইজরায়েলের হামলা বন্ধ না হলে, এই ধরনের হামলা চলতেই থাকবে বলে হুমকি দিয়েছে লেবাননের হুথি গোষ্ঠী।