বৃদ্ধাকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করে হেফাজতে রাখার বাহানায় এক সপ্তাহ ধরে ৮০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের আজমেঢ়ে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ নভেম্বর ওই বৃদ্ধার মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিও কল আসে। ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা পুরুষ নিজেকে মুম্বাই পুলিশের সাইবার শাখার আধিকারিক বলে পরিচয় দেয় ওই বৃদ্ধার কাছে। ওই পুরুষ বৃদ্ধাকে জানান, সাম্প্রতিক একটি গুরুতর অপরাধের সঙ্গে ওই বৃদ্ধার যোগসূত্র থাকায় তাঁকে ডিজিটাল গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরপর ওই বৃদ্ধাকে ভয় দেখিয়ে দফায় দফায় একটি নির্দিষ্ট একাউন্টে টাকা পাঠাতে বলা হয়। বৃদ্ধা ভয় পেয়ে সেই একাউন্টে এক সপ্তাহে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেন।
এক সময় বৃদ্ধা বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপরেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। জয়পুরের সাইবার অপরাধ দমন শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহিত চৌধুরী নেতৃত্বে তদন্তে নামে পুলিশের একটি বিশেষ দল। পুলিশ জানতে পারে, ওই মহিলার থেকে ৮০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর এই টাকা ১৫০ টি একাউন্টে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এমনকি একাউন্ট থেকে টাকা তোলার পর তা ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও বদলে ফেলা হয়।
পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর এও জানতে পারে, বড় বড়সড় অপরাধচক্রের সঙ্গে এই ঘটনার যোগ রয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিতে নামে পুলিশ। এই ঘটনায় শনিবার পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন, ডেবিট কার্ড, পাসবই ইত্যাদি। এই ঘটনায় আর কারা কারা যুক্ত আছে তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বেশ কয়েকদিন যাবত এই ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ঘটনা সামনে আসছে। এই ‘ডিজিটাল গ্রেপ্তারি’র সঙ্গে আসল গ্রেপ্তারের কোনও সম্পর্কই নেই। এটা সাইবার প্রতারণার একটি ফাঁদ মাত্র।
এখানে প্রতারকেরা সিবিআই, নারকোটিক্স, আরবিআই কিম্বা শুল্ক এবং আয়কর দপ্তরের আধিকারিক সেজে সাধারণ মানুষকে ফোন করে। তারপর ওই ব্যক্তি কিংবা তাঁর পরিবারের কারও সঙ্গে গুরুতর অপরাধের সম্পর্ক রয়েছে, তাই গ্রেফতার করা হবে, এমন ভয় দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। এই ঘটনায় নড়ে চড়ে বসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যে অ্যাকাউন্ট থেকে এই ধরনের সাইবার প্রতারণা করা হয়েছে তা সেগুলিকে চিহ্নিত করে বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ব্লকও করা হয়েছে।