শনিবার আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসী ভারতীয়দের নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বিমান নামে অমৃতসরে। অবৈধ অভিবাসনের অভিযোগে এবার আমেরিকা থেকে ভারতে পাঠানো হয়েছে ১১৯ জনকে। এদিন সি ১৭ বিমানটি অবতরণ করতেই ওই ১১৯ জনের মধ্যে ২ জন খুনের আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২০২৩ সালে ধৃতরা খুন করে আমেরিকায় পালিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ধৃতদের নাম সন্দীপ ও প্রদীপ। তাঁরা সম্পর্কে তুতো ভাই।
প্রসঙ্গত খুন করে ভিন রাজ্যে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটে। আর বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও নতুন নয়। আর একবার অভিযুক্তরা কোনওভাবে বিদেশে পালিয়ে গেলে প্রশাসনের পক্ষে তদন্ত করা বা অভিযুক্তকে আটক করে চার্জশিট গঠন করা দুরূহ ব্যাপার হয়ে যায়। কিন্তু ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই মার্কিন মুলুকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত যে শাপে বর হয়ে যাবে, তা অনেকেই ভাবতে পারেননি। দ্বিতীয় দফায় ফেরত পাঠানো অবৈধ অভিবাসী ভারতীয়দের মধ্যে দুইজন গ্রেপ্তার হতেই বিষয়টি সামনে এলো।
জানা গিয়েছে, প্রথম দফার পর এই নিয়ে দ্বিতীয় দফায় পঞ্জাবের অমৃতসরে নামল মার্কিন সেনার বিমান। অমৃতসরের শনিবার শ্রী গুরু রামদাস বিমানবন্দরে এই অবৈধ অভিবাসীদের নামিয়ে দিয়ে যায়। তারপরই পাতিয়ালা পুলিশ গ্রেপ্তার করে ওই ২ জনকে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালের ২৬ জুন পাতিয়ালার রাজপুরা টাউনে এক মামলায় খুনের অভিযোগ রয়েছে এই ২ জনের বিরুদ্ধে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এই ২ জনের বিরুদ্ধে কোনও ‘লুক আউট’ নোটিস জারি করা হয়নি।
প্রসঙ্গত এঁদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে আমেরিকায় বসবাসের অভিযোগ রয়েছে। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে তৎপর হয়েছে মার্কিন প্রশাসন। প্রথম দফায় ১০৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ফের ১৫ ফেব্রুয়ারি ২য় দফায় ১১৯ জনকে একইভাব হাতে পায়ে শিকল বেঁধে ভারতে ফেরত পাঠিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। এই ১১৯ জন ভারতীয়দের মধ্যে ৬৭ জন পঞ্জাবের, ৩৩ জন হরিয়ানার, বাকি ৮ জন উত্তর প্রদেশ, গোয়া, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, রাজস্থানের বাসিন্দা। এছাড়াও এদের মধ্যে ১জন হিমাচল প্রদেশের ও ১ জন জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে পাটিয়ালার রাজপুরায় এক খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল সন্দীপ ও প্রদীপের। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। গ্রেপ্তারির আশঙ্কায় তারা অবৈধভাবে আমেরিকায় পালিয়ে যায়। সেখানেই বসবাস শুরু করে তারা। অপরাধীরা নাগালের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ায় এতদিন খুনের তদন্তের কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তবে দুই বছরের ব্যবধানে মার্কিন সরকারের দৌলতে আশ্চর্যভাবে তাঁদের হাতে পেল পাঞ্জাব পুলিশ।