কৃষি পরিকাঠামো বিপণনে ১ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এক লাখ কোটি টাকার প্যাকেজের মধ্যেই মৎস্যচাষ ও পশুপালনও সংযুক্ত করা হয়েছে। কৃষিভিত্তিক তিনটি সংস্কারেও ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে এই আর্থিক প্যাকেজের কোনওটাই কার্যত প্রত্যক্ষভাবে কৃষকদের জন্য বা কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত নয়। ঘুরপথে কৃষির সামগ্রিক উন্নয়নের প্রকল্প এটি। এই প্যাকেজে কৃষকরা কতটা লাভবান হবেন সেবিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
কারণ প্যাকেজের অর্থ ব্যয় করা হবে কৃষি সহযোগী নানা ক্ষেত্রে। এর মধ্যে কোল্ড স্টোরেজ তৈরি, কৃষি পণ্য পরিবহণ ও বিপণন ইত্যাদির উন্নয়ন ধরা হয়েছে। এতে কৃষক ও কৃষি সমবায়গুলিও উপকৃত হবে বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী। খুব শীঘ্রই তহবিল গঠন করে কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন।
মৎস্যচাষ, পশুপালন, দুগ্ধ উৎপাদন, মৌমাছি পালনেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মৎস্য চাষে প্যাকেজ ২০ হাজার কোটির মধ্যে এগারো হাজার কোটি টাকা খরচ হবে সামুদ্রিক মৎস্য চাষ, শিকাল ও রফতানি ক্ষেত্রে। বাকি ৯ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে অন্তর্দেশীয় মৎস্য চাষের জন্য।
গবাদি পশুর খুরা রোগ ও মুখের রোগ নিয়ন্ত্রণে টিকাকরণে খরচ হবে তেরো হাজার তিনশো তেতাল্লিশ কোটি টাকা। ডেয়ারি শিল্পের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুগ্ধজাত সামগ্রি রফতানি ও উৎপাদন শিল্পে উৎসাহ ভাতার মতো ঘোষণা করা হয়েছে।
খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, অঞ্চলভিত্তিক খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ ক্লাস্টার তৈরি করা হবে। তিনি জানান বিহারে মাখন খুব ভাল তৈরি হয় সেখানে মাখন ক্লাস্টার তৈরি হবে একইভাবে কাশ্মীরে কেশর, অন্ধ্রপ্রদেশে লঙ্কা ঘিরে ক্লাস্টার গড়ে তোলা হবে। এক্ষেত্রে দুই লাখ ক্ষুদ্র শিল্প উপকৃত হবে। ভেষজ ও ওষধি উদ্ভিদ উৎপাদনে বরাদ্দ করা হয়েছে চার হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে গঙ্গার ধার বরাবর আটশো হেক্টর সহ দশ লাখ হেক্টর জমিতে উদ্ভিদের চাষ করা হবে। মৌমাছি পালনেও পাঁচশো কোটি টাকা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় এমন দুই লাখ মৌমাছি পালক এতে উপকৃত হবেন বলে অর্থমন্ত্রী দাবি করেছে।
কৃষি ক্ষেত্রে যে সংস্কারের কথা তিনি জানিয়েছেন তার মধ্যে ফসল বিক্রিতে কৃষকদের স্বাধীনতা দিতে নতুন আইন আনা হচ্ছে। এখন শুধুমাত্র লাইসেন্সধারী প্রতিনিধিদেরই ফসল বিক্রি করা যায়। নতুন আইনে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা থাকবেনা। আন্তরাজ্য ফসল বিক্রির সংস্থান থাকছে নতুন আইনে।
অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধন করে খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে কৃষিজাত পণ্য মজুতের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়া হবে। তবে মহামারী ও দুর্যোগের সময়ে সরকারি নিয়ম কায়েম হতে পারবে। তৃতীয় কৃষি সংস্কারে কৃষকদের ফসলের দামের নিশ্চয়তা দিতে নতুন বিধি আনা হবে। কিন্তু সেই বিধি নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।